রাজনীতি

মাজেদের ফাঁসি যে কোনো সময় কার্যকর: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদের ফাঁসিতে আর কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। এখন ফাঁসিতে আর কোন বাধা নেই। যে কোন সময় আমরা ফাঁসি কার্যকর করতে পারব।’

বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা জানান।

ফাঁসি কার্যকরের সময় ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে কি-না সে সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোন সময় নির্ধারণ করে দিচ্ছি না। আমরা বসব, বসে সিদ্ধান্ত নিবো।’

গত বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন আব্দুল মাজেদ। আবেদন খারিজের পর নিয়ম অনুযায়ী তার ফাঁসির কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই। আবেদন খারিজ হওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে ফাঁসি কার্যকরের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের। তারা বলছেন, নির্দেশ পেলেই যেকোনো মুহূর্তে ফাঁসি কার্যকর করা হবে।

এর আগে গত বুধবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত আব্দুল মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল দুপুরে কারা কর্তৃপক্ষ আসামিকে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হেলাল চৌধুরীর আদালতে হাজির করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটররা আসামি গ্রেপ্তার দেখানোসহ আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামি আব্দুল মাজেদকে গ্রেপ্তারসহ মৃত্যু পরোয়ানার আবেদন মঞ্জুর করেন।

দীর্ঘ দেড় যুগের বেশি সময় ভারতে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর এই আত্মস্বীকৃত খুনি মঙ্গলবার মিরপুর সাড়ে ১১ থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) একটি দল। গত মাসে দেশে ফিরে মাজেদ স্ত্রীর ক্যান্টনমেন্ট আবাসিক এলাকার এক নম্বর রোডের ১০/এ বাড়িতে বসবাস করছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। ৩৪ বছর পর ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। খুব ধীরে দীর্ঘ বারো বছরে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে আইনের প্রতিটি ধাপ স্বচ্ছতার সঙ্গে অতিক্রম করে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে স্বঘোষিত খুনিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে কারাবন্দি পাঁচ আসামির ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ফাঁসি কার্যকর হয়। তারা হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য ছয় আসামি পলাতক ছিলেন। তাদের মধ্যে আবদুল মাজেদকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়।

পলাতক বাকি পাঁচজনের মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুর রশিদ (বরখাস্ত) লিবিয়া ও বেলজিয়ামে অবস্থান করছেন। বেশিরভাগ সময় লিবিয়াতে থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। লে. কর্নেল (অব.) শরীফুল হক ডালিম (বরখাস্ত) পাকিস্তানে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী (বরখাস্ত) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে, লে. কর্নেল (অব.) এন এইচ এমবি নূর চৌধুরী (বরখাস্ত) কানাডায় রয়েছেন। আর রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ভারতের কারাগারে আটক বলে অনেকে ধারণা করছেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button