রংপুর বিভাগসারাদেশ

নীলফামারীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে ভেজাল মিষ্টি

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীতে নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ গুড়ো দুধ, আটা-ময়দা মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ছানা। আর অসাধু মিস্টি ব্যবসায়ীরা কম দামে সেই ছানা কিনে তার সঙ্গে ক্ষতিকর সোডিয়াম সাইল্লামেট বা ঘন চিনি ও সিনথেটিক রং মিশিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি মিস্টি বাজারজাত করছ। তৈরি মিস্টিগুলো রাস্তার পাশেই খোলা অবস্থাতে রাখায় জমছে ধূলা-বালু ও রোগ-জীবাণু। এতে বাড়ছে মারাত্বক স্বাস্থ্যঝুঁকি। আর যেসব দোকানে ভাল মানের মিস্টি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি দাম নিয়ে ওজনে কম দেয়া হচ্ছে এমনকি দু’চার দিনের বাসি মিষ্টিও বিক্রি করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে খাদ্যদ্রব্য ও ফলমুলে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো হলেও বরাবর আড়ালে থেকে যাচ্ছে উপজেলার মিষ্টির দোকান ও কারখানা গুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সাধারণ চিনির চেয়ে ৫০ গুন মিস্টি হয় ঘনচিনি। এক কেজি চিনি খাবারকে যতটা মিস্টি করতে পারে মাত্র ২০ গ্রাম ঘন চিনি খাবারকে ততখানি মিস্টি করে তোলে। সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহররের পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠাসহ নামি-দামি হোটেল এবং বিভিন্ন হাটে-বাজারে অবস্থিত সিংহভাগ মিস্টির দোকান সংলগ্ন কারখানা গুলো এত নোংরা যা দেখলে গা শিউরে উঠে। মেঝের উপর চট বিঝিয়ে ছানা ও ময়দা মিশিয়ে মিষ্টি বানাচ্ছে। মিস্টির কারিগররা যে পোষাক পরিধান করে আছে তা অত্যন্ত নোংরা। আর এসব নোংরা পরিবেশে তৈরী ভেজাল মিষ্টি না জেনে কিংবা বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
নীলফামারীর সংগলশী ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক যুবক বলেন, বিয়ের পরপরই শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার শহরের নামী একটি হোটেল থেকে পাঁচ কেজি মিষ্টি কিনে নিয়ে যাই। কিন্তু মিষ্টি খোলার পর টক ও দুর্গন্ধ হওয়ার কারণে তা ফেলে দিতে হয়েছে। পুটিমারী ইউনিয়নের আক্কাশ মন্ডল বলেন, আমার মেয়ে মিষ্টি খেতে বেশ পছন্দ করে। দেড় কেজি মিষ্টি কিনে এনে বাসায় মেপে দেখি সেখানে ১ কেজি ২শ গ্রাম মিষ্টি রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারিগররা জানান, ভেজাল ছানা দিয়ে আগের দিনের অবিক্রিত মিষ্টি মিশিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। শুধু তাই মিষ্টির স্বাদ বাড়ানোর জন্য বিস্কুটের গুড়া ব্যবহার করা হয়। ভেজাল মিষ্টি সম্পর্কে জানতে চাইলে নীলফামারী ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সেই মিষ্টি দোকানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, শিগগির মিষ্টির দোকান গুলোতে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button