খেলাজাতীয়লিড নিউজ

জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন, ১৮ মাস নিষিদ্ধ হতে পারেন সাকিব

বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। তাকে ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সেই ঘোষণা আসতে পারে আজ অথবা আগামীকাল। সেটি হলে বাংলাদেশ দলের আসন্ন ভারত সফরে যেতে পারবেন না তিনি। শুধু তাই নয়, আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও হয়তো তাকে দেখা যাবে না।

ঘটনাটি দুই বছর আগের। একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে এক ক্রিকেট জুয়াড়ির কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু সাকিব সেটি তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করে দেন। সমস্যা হচ্ছে, সাকিব বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। কিন্তু কোনো ক্রিকেটার যদি এ ধরনের কোনো প্রস্তাব পেলে আইসিসিকে জানাতে হয়। এই না জানানোটাই কাল হতে যাচ্ছে সাকিবের জন্য।

সাকিব বিষয়টি আইসিসিকে না জানালেও আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ (আকসু) পরে বিষয়টি জানতে পেরেছে। আন্তর্জাতিক জুয়াড়িদের কল রেকর্ড ট্র্যাকিং করে এ ব্যাপারে তারা তথ্য উদ্ধার করে। ওই জুয়াড়ি আইসিসির কালো তালিকায় থাকাদের একজন। বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পর সম্প্রতি সাকিবের সঙ্গেও কথা বলেন আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট (আকসু) প্রতিনিধি।

জানা গেছে, সাকিবও নিজের ভুল স্বীকার করেছেন আকসু তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে। আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, জুয়াড়ির প্রস্তাবকে তিনি একেবারেই গুরুত্ব দেননি।

আইসিসির তদন্তের পর সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব। বিসিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আজ অথবা আগামীকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানাবে আইসিসি। বিসিবি এরই মধ্যে এ বিষয়ে অবগত হয়েছে।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ইতোমধ্যে একাধিক ব্রিফিং ও সাক্ষাৎকারে ৩০ অক্টোবর আইসিসির একটি রিপোর্ট পাওয়ার কথা বলেছেন। গত ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিষয়েও ইঙ্গিত দেন তিনি। সাকিব যে ৩০ অক্টোবর দলের সঙ্গে ভারত যেতে পারছেন না, সেটিও এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন বিসিবি সভাপতি। ভারত সফরে নতুন অধিনায়ক পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কথাও উল্লেখ করেছেন পাপন। সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, এত কিছুই ঘটেছে সাকিবের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞাকে সামনে রেখে।

আইসিসি ইতোমধ্যে সাকিবের ব্যাপারে বিসিবিকে বিস্তারিত জানিয়েছে। তাকে জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন না করার নির্দেশনাও দিয়েছে আইসিসি। এ কারণে অসুস্থ বলে জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দিচ্ছেন না সাকিব।

বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, সাকিব পরবর্তী সময়ে আকসুকে সহায়তা করায় একটু নমনীয় তারা। শাস্তি ১৮ মাস নির্ধারণ করা হলেও সাকিব আপিল করলে সেটা কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। বিসিবির সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি সাকিব আইসিসির কাছেও ক্ষমা চেয়ে শাস্তি মওকুফের আবদেন করবেন। আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগের নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনে চললে এই শাস্তি ছয় মাসে নেমে আসতে পারে। এটাই এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি।

আইসিসির দুর্নীতি দমন নীতিমালায় আছে, কোনো ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, আম্পায়ার, স্কোরার, গ্রাউন্ডসের সদস্য, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংশ্নিষ্ট যে কেউ জুয়াড়ির কাছ থেকে যে কোনো ধরনের প্রস্তাব পেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা আইসিসি বা সংশ্নিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাদের জানাতে হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button