খেলা

পথ হারানো টাইগারদের মাঝারি স্কোর

শুরুটা যেভাবে করেছিল বাংলাদেশ, শেষটা মোটেও সেরকম হলো না। লিটন-নাঈম-সৌম্যদের ধ্বংসাত্মক ব্যাটিংয়ের পর ইনিংসের মাঝামাঝি পথ হারিয়ে বড় স্কোরের আশা জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে টাইগারদের। টপ অর্ডার ভেঙে পড়ার পর একমাত্র মাহমুদউল্লাহ ছাড়া কেউ দায়িত্ব নিতে পারেননি। যে কারণে রাজকোটের ব্যাটিং স্বর্গে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান তুলেছে টিম টাইগার। এই স্কোর দিয়ে রোহিত শর্মাদের আটকে রেখে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়া কতটুকু সম্ভব সেটাই এখন দেখার।

রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করে চলছেন লিটন দাস এবং মোহাম্মদ নাঈম। দুজনেই রয়েছেন মারমুখী মেজাজে। ৬ষ্ঠ ওভারে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে স্টাম্পিং হয়েছিলেন লিটন দাস। কিন্তু রিভিউতে দেখা যায় বল না ধরেই স্টাম্প ভেঙেছেন উইকেটকিপার ঋষভ পন্ট! বেঁচে যান লিটন। পরের দুই বলে বাউন্ডারি মেরে জবাব দেন তিনি। তরুণ ঋষভ এই তাড়াহুড়া না করলে লিটন আউট হতেন। পরের ওভারে সহজ ক্যাচ দিয়েও রোহিত শর্মার কল্যাণে বেঁচে যান লিটন।

দুইবার অবিশ্বাস্যভাবে জীবন পেলেও শেষ পর্যন্ত ফিরতেই হয় লিটন দাসকে। তবে রান-আউট হয়ে। ৭.১ ওভারে ৬০ রানের ওপেনিং জুটি গড়ার পর নাঈমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউট হন ২১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৯ রান করা লিটন। তবে বাংলাদেশের রানের গতি কমেনি। উইকেটে গিয়েই মারতে শুরু করেন সৌম্য সরকার। তবে আবারও ছন্দপতন। ওয়াশিংটন সুন্দরকে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় শ্রেয়স আইয়ারের তালুবন্দি হন ৩১ বলে ৫ চারে ৩৬ করা অপর ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। আবারও সৌম্যর সঙ্গে জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহিম।

আজ আর সৌম্য-মুশফিক জুটি বড় হয়নি। যুজবেন্দ্র চাহালের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার তালুবন্দি হন প্রথম ম্যাচের হিরো মুশফিক (৪)। ১৩তম ওভারে একশ ছাড়ায় টাইগারদের স্কোর। বিধ্বংসী মেজাজে খেলতে থাকা সৌম্য চাহালের বলের টাইমিং মিস করে স্টাম্পড হয়ে যান। ২০ বলে ২ চার ১ ছক্কায় তার সংগ্রহ ৩০ রান। তার আউট নিয়েও নাটক হলো। তৃতীয় আম্পায়ার আগে ‘নট আউট’ এর ভুল ঘোষণা দিয়ে আবারও ‘আউট’ ঘোষণা করেন!

দুই ইনফর্ম তারকা আউট হওয়ার পর রানের গতি কমে যায়। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আর আফিফ স্ট্রাগল করতে থাকেন উইকেটে। ধুঁকে ধুঁকে ব্যাটিং করা আফিফ হোসেন ৮ বলে ৬ রান করে ক্যাচ তুলে দেন। তার আগেই হাত খুলেছেন মাহমুদউল্লাহ। তার সঙ্গে যোগ দেন মোসাদ্দেক। দুই মমিসিংগার জুটিও বড় হয়নি। ২১ বলে ৩০ করার মাহমুদউল্লাহ কাট করতে গিয়ে দিপক চাহারের বলে শিবম দুবের হাতে ধরা পড়েন। শেষ ওভারে দেড়শ পার করে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভার ৬ উইকেটে সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৩ রান। মোসাদ্দেক (৭*) আর আমিনুল (৫*) অপরাজিত থাকেন।

সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট একাডেমির পিচ দেখে সেটাকে রীতিমতো ‘ব্যাটিং স্বর্গ’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। তারপরেও ভারতের ফিল্ডিং নেওয়ার কারণ হলো, তারা আগে ব্যাট করার চেয়ে রান চেজিংয়ে ভীষণ শক্তিশালী। টি-টোয়েন্টি সংস্করণের আবির্ভাবের পর ভারতের মাটিতে ভারতকে কোনো দলই তিন ম্যাচের সিরিজে হারাতে পারেনি। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে এই অসম্ভব কীর্তি গড়ার সুযোগ পেয়েছে টিম টাইগার। আজ হেরে গেলেও সমস্যা নেই। এই রেকর্ড গড়তে তৃতীয় ম্যাচটি তো হাতে থাকছেই।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button