খেলা

সেই দিনগুলোতে ‘দুই জোড়া’ জুতা-জামাও ছিল না বুমরাহর

স্পোর্টস ডেস্ক
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তবু থেমে থাকেননি জাসপ্রিত বুমরাহ। বাকি সময়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জাতীয় দলের পেস আক্রমণের কর্ণধার হিসেবে। এখন বিশ্ব ক্রিকেটেরই নাম্বার ওয়ান পেসার তিনি।

বুমরাহর এমন উত্থানের নেপথ্য কারিগর মা দলজিৎ। ভীষণ আর্থিক অনটনের মধ্যেও ছেলের স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন তিনি। স্বভাবতই টেলিভিশনে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের জার্সি গায়ে ছেলের প্রথম ম্যাচ দেখে কান্নায় ফেটে পড়েন রত্নগর্ভা মা। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বুমরাহর পাশে বসেই বেমালুম কথাগুলো বলে গেছেন দলজিৎ।প্রসঙ্গে টেনেছেন কঠিন লড়াইয়ের সেই দিনগুলোর কথা। ২০১৩ সালে আইপিএলে অভিষেক হয় বুমরাহর। সেই থেকে এখনও তাকে ধরে রেখেছে মুম্বাই। আগলে রেখেছে ঘরের ছেলের মতোই। সুফলও হাতেনাতে দিচ্ছেন তিনি।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বুমরাহকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করেছে ফ্র্যাঞ্জাইজিটি। পরতে পরতে ফুটে উঠেছে তার করুন সংগ্রামের কাহিনী এবং ছোটবেলা থেকে বিশ্ব তারকা হয়ে ওঠার লড়াইয়ের গল্প। বুমরাহ বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এতটাই শোচনীয় ছিল যে, আমাদের সংসার চালানোর সামর্থ্য ছিল না। অনুশীলনের জন্য একজোড়া জুতা এবং একটি টি-শার্টই ছিল আমার অবলম্বন। প্রতিদিন সেগুলো পরিষ্কার করে প্র্যাকটিসে যেতাম।

সবচেয়ে কাছ থেকে ছেলের লড়াই প্রত্যক্ষ করেছেন মা দলজিৎ। তাকেও কম বেগ পেতে হয়নি। তাই কঠিন দিনগুলোর কথা স্মরণ করতে গিয়ে কান্নায় ফেটে পড়েন তিনি। দলজিৎ বলেন, এখন আমার ছেলের সংগ্রহে অসংখ্য নামীদামি ব্র্যান্ডের জুতা। কিন্তু একটা সময় তাকে নাইকির শো-রুমে নিয়ে গিয়েও অর্থাভাবে কিনে দিতে পারিনি। আমার ছেলে তখনই বলেছিল, একদিন আমি এ জুতাগুলো সব কিনব।

তিনি বলেন, বুমরাহকে প্রথম টেলিভিশনে আইপিএলে খেলতে দেখে নিজের কান্না থামাতে পারিনি। আর্থিক-শারীরিকভাবে আমার সব লড়াই চোখের সামনে দেখেছে সে। মাকে দেখেই লড়াইয়ের রসদ নেন বুমরাহ। তিনি বলেন, দুঃসহ সময়গুলো আপনাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। জীবনে চলার পথে অনেক বিপদ আসবে। তবে এগুলো দমাতে পারবে না। কারণ, অতীতে আপনি আরও কঠিন সময়ের মোকাবেলা করেছেন।

এখন পিঠের চোটে কাবু বুমরাহ। জাতীয় দল থেকে রয়েছেন সাময়িক বিশ্রামে। সেরে উঠতে এ মুহূর্তে লন্ডনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি। শিগগির সুস্থ হয়ে দলে ফিরবেন গুজরাটের এ পেসার। বলা বাহুল্য, এর মধ্যে জীবন সংগ্রামের করুন কাহিনী তার প্রতি অনুরাগীদের শ্রদ্ধা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button