অর্থনীতি

বাজেটে আইসিটি খাতে বরাদ্দ কমছে ৫১৬ কোটি টাকা

আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার কথা। সবকিছু ঠিক থাকলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল ওই দিন দ্বিতীয়বার বাজেট পেশ করবেন। ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শীর্ষক এই বাজেট প্রস্তাবে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। বিপুল এই ব্যয়ের মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ ৩৮ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডিজিটাল বাংলাদেশে মূল স্তম্ভ আইসিটি খাতকে আরো মজবুত করতে এবারের বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে না। বরং কমছে। গত অর্থ বছরের তুলনায় আসন্ন অর্থ বছরে আইসিটি খাতে বরাদ্দ কমছে ৫১৬ কোটি টাকা।

সূত্রমতে, এবারের বাজেটে মোট প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ আসছে ১৪১৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ থাকছে ১০৪৮ কোটি টাকা। বাকি অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে রেভিনিউ খাতে। প্রযুক্তি খাতে সরাসরি বরাদ্দ না বাড়লেও শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বাড়ছে। এখাতে বরাদ্দ পাচ্ছে ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। সূত্রমতে, এই বারদ্দ থেকে শিক্ষার ঘটতি কমিয়ে আনতে অনলাইনে দূরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসার ও প্রশিক্ষণ কাজে ব্যয় করা হবে।

এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বাজেট প্রস্তাবনা বিষয়ে বলেছেন, করোনা কালে তিন মাসে ই-কমার্স সেবার ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে এবারের বাজেটে ই-কমার্সে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার এবং ই-কাব ও ইন্টারনেট সেবাকে আইটি নির্ভর সেবা হিসেবে অন্তর্ভূক্তির আবেদন করেছি। আমরা আশা করছি, এই বাজেটের মধ্য দিয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। কারণ আমরা লক্ষ্য করছি, চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ও সেবা খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে।

এদিকে বাজেটে ব্যবসায়িদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠন, মোবাইলে কথা বলার ওপর সম্পূরক শুল্ক কমানো, ইন্টারনেট সেবাকে ভ্যালু চেইন আইটি এনাবল সেবার অন্তর্ভূক্তি, নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার এবং আইসিটি নির্ভর শিক্ষা কার্যক্রমে বাড়তি অর্থায়নের দাবি জানিয়েছিলেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বাজেট পেশের পর এই দাবি কতটা পূরণ হলো তা জানা যাবে।

আইসিটি খাতের বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বাজেটে আইসিটি খাতের বরাদ্দ ছিলো ১২১০ কোটি টাকা। পরের অর্থবছরে এই বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮৩৫ কোটি টাকায়।

আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বরাদ্দ দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯৭৪ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৮-১৯ সালে কমে কমে দাঁড়ায় ১৭০৭ কোটি টাকায়। তবে চলতি  অর্থ-বছরে (২০১৯-২০) এই অংক কিছুটা বাড়ানো হয়। সংশোধিত বাজেট শেথে ১৯৩০ কোটি টাকার বাজেট পায় দেশের প্রযুক্তি খাত। এর মধ্যে ১৬৪৫ কোটি টাকা ছিলো উন্নয়ন খাতে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে মন্ত্রণালয় গঠনের পর আইসিটি ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে মানবসম্পদ উন্নয়ন, সরকারি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া, আইসিটি শিল্পের বিকাশ এবং সবার জন্য ইন্টারনেট, এই ৪টি স্তম্ভ নিয়ে কাজ শুরু করে আইসিটি বিভাগ। গত ১১ বছরের এই স্তম্ভ শক্তিশালী করতে করোনাকালে বাংলাদেশ সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button