অর্থনীতি

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল : শিল্পমন্ত্রী

বিশ্বের অনেক দেশের কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

সোমবার (৪ নভেম্বর) আবুধাবির এমিরেটস্ প্যালেস হোটেলে ইউনিডোর ১৮তম সাধারণ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী প্রকৌশলী সুহাইল আল মাজরুইর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) মহাপরিচালক লি ইয়াং বক্তব্য দেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের পর ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০২৪ সালের মধ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।

শিল্পখাতের বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে হুমায়ূন বলেন, ‘দক্ষ বেসরকারিখাতের বিকাশ, বিনিয়োগবান্ধব নীতি, স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদি শিল্পায়ন পরিকল্পনা, উদ্যোক্তাবান্ধব আমদানি, রফতানি ও আর্থিক নীতি এবং প্রণোদনার ফলে বাংলাদেশের শিল্পখাত দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার পরিকল্পিত শিল্পনগর, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, অর্থনৈতিক জোন, হাইটেক পার্কসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো গড়ে তুলছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় শতভাগ রফতানিমুখী শিল্পের উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্পায়নের লক্ষ্যে এর পাশাপাশি ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের উদীয়মান শিল্পখাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে।’

শিল্পমন্ত্রী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্পায়নের মাধ্যমেই স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট অর্জন সম্ভব। এ লক্ষ্যে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে ইস্তাম্বুল কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি অষ্টম এলডিসি মন্ত্রিপর্যায়ের সম্মেলনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সভার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে ইউনিডোর অংশীদারত্ব জোরদার করতে হবে। বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে তিনি জানান।

পরে মন্ত্রী একই স্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী প্রকৌশলী সুহাইল আল মাজরুইর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহায়তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে সারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসতে পারে। তিনি সার কারখানা স্থাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ, হালকা প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক, আইসিটিসহ উদীয়মান শিল্পখাতে বিনিয়োগের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি প্রকৌশলী সুহাইল আল মাজরুইকে বাংলাদেশ সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।

বৈঠকে ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত আবু জাফর, আবুধাবিতে অবস্থিত ডেপুটি চিফ অব মিশন মিজানুর রহমান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ উপস্থিত ছিলেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button