অর্থনীতি

২০০ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি ঋণ আদায় ৯১ কোটি টাকা

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাজ করতে পারছে না রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ’(আইসিবি)। গত অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাথে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’র (এপিএ) প্রায় সব সূচকেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী এই প্রতিষ্ঠানটি। যেমন : খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯১ কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ১ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ৫ লাখ টাকা। অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পুঁজিবাজারে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আইসিবির। এর বিপরীতে গত অর্থবছরের সংস্থাটি বিনিয়োগ করেছে দুই হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে গত জুন শেষে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

অন্য দিকে, নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ানো, ইস্যু ম্যানেজমেন্ট ও আন্ডার-রাইটিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল যথাক্রমে ২ হাজার ৫০০জন, ১০টি ও ৮টি। এর বিপরীতে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৩৯৪জন এবং ইস্যু ম্যানেজমেন্ট ও আন্ডার-রাইটিংয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৬টি ও ৫টি। অন্য দিকে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড সার্টিফিকেট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে বিক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি টাকা।

প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত অর্থবছরে আইসিবির মার্জিন ঋণ বিতরণ ও ইক্যুইটি হিসেবে অর্থ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা এবং ৯০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে দেয়া হয়েছে যথাক্রমে ৫৭৯ কোটি টাকা এবং ২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৩৫০ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৬৪৬ কোটি টাকা।

অন্য দিকে, বিভিন্ন খাতে ঋণ আদায়ের মধ্যে বকেয়া মার্জিন ঋণ খাতে ১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩২৬ কোটি টাকা; ৯৫ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৬ কোটি টাকা এবং ইক্যুইটি হিসেবে বিতরণকৃত অর্থ থেকে ৪৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৯ কোটি টাকা আদায় করেছে আইসিবি।

আইসিবির মতে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুদ্রাবাজার থেকে পরিবর্তনশীল সুদহারে সংগৃহীত তহবিলের ওপর নির্ভরশীলতা এবং পর্যাপ্ত তহবিল প্রাপ্তির সীমাবদ্ধতা; স্বল্পমেয়াদে তহবিল সংগ্রহ করে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগের ফলে সংস্থার তহবিল ব্যয় ও সুদ ব্যয় বেড়ে যাওয়া; বিপুল পরিমাণ মার্জিন ঋণ অনাদায়ী থাকা সংস্থাটির প্রধান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ।

এ প্রেক্ষিতে যেসব সূচকে সংস্থাটির অর্জন সন্তোষজনক নয়; সেসব ক্ষেত্রে আগামীতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে আইসিবিকে নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। চুক্তি অনুযায়ী এ বিষয়ে নিয়ে আগামী মাসে সংস্থাটির সাথে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button