অর্থনীতি

পিপলস লিজিংয়ে ব্যক্তি আমানতকারীদের সাধারণ সভা শনিবার

অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছেন অবসায়নের প্রক্রিয়ায় থাকা পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীরা। এখন পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে সাধারণ সভার আয়োজন করেছে পিপলস লিজিং এন্ড ফিনেন্সিয়াল সার্ভিসেস এর ব্যক্তি আমানতকারী কাউন্সিল। আগামী শনিবার গুলশান-১ এর ইমানুয়েল বানকুয়েট হলে এই সভা আহ্বান করা হয়। কাউন্সিলের সভাপতি আনোয়ারুল হক এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।

এর আগে গত সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে অর্থমন্ত্রীর দফতরে পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীদের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করেন। এ সময় তারা পিপল্স লিজিংয়ের অবসায়ন প্রক্রিয়া বন্ধ করার পাশাপাশি আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ক্ষুদ্র ও ব্যক্তি আমানতকারীদের সঞ্চয়ের অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

সাক্ষাৎ শেষে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে আতিকুর রহমান আতিক সাংবাদিকদের বলেন, পিপলস লিজিংয়ের ক্ষুদ্র আমানতকারীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ রেখে এখন তা ফেরত পাচ্ছে না। তারা চরম অসহায় অবস্থায় দিন পার করছেন। তারা কোথায় গেলে এ টাকা ফেরত পাবেন, তারও কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় হাজারো আমানতকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এক অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন। এ টাকা থেকে অনেক অবসরপ্রাপ্ত মানুষের সংসারের ব্যয় নির্বাহ, সন্তানের লেখাপড়া ও চিকিত্সা খরচ চলত; কিন্তু এখন এসব ব্যয় নির্বাহের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘একটি অসাধু চক্র কৌশলে আমাদের সর্বশান্ত করে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে নামে-বেনামে আমানতকারীদের অর্থ বাগিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিকল্পনামাফিক তারা এ প্রতিষ্ঠানটিকে অবসায়নের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমরা ভীত যে, এভাবে এগোতে থাকলে এ চক্র সব দায়দেনা থেকে মুক্তি পাবে এবং শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। আমাদের সব সঞ্চয় লুট করে এ লিজিংয়ের পরিচালকসহ অন্যরা আয়েশি জীবনযাপন করছে। বিদেশে তারা সেকেন্ড হোম বানাচ্ছে।’

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। পিপল্স লিজিংয়ের বিনিয়োগকারীদের পক্ষে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রশান্ত কুমার দাস, রানা ঘোষ, সামিয়া বিনতে মাহবুব, আবু নাসের বখতিয়ার ও কামাল আহমেদ প্রমুখ।

পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান অবস্থা:

পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান আমানত ২ হাজার ৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩শ কোটি টাকা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। বাকি ৭শ কোটি টাকা ৬ হাজার ব্যক্তি শ্রেণির আমানত। প্রতিষ্ঠানটি ঋণ দিয়েছে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৪৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। এটি মোট ঋণের ৬৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। খেলাপি ঋণের বড় অংশই নিয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা।

ধারাবাহিকভাবে লোকসানের কারণে ২০১৪ সাল থেকে পিপলস লিজিং লভ্যাংশ দিতে পারছে না। তবে আমানতের বিপরীতে কাগজকলমে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ২৬৯ কোটি টাকার সম্পদ দেখানো হলেও বাস্তবে তিন ভাগের এক ভাগও নেই বলে জানা গেছে।

১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর পিপলস লিজিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পায়। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button