শিক্ষাঙ্গন

খসড়ার ১ বছর পরও শিক্ষাআইন প্রণয়নে গড়িমসির অভিযোগ

শিক্ষা আইনের খসড়া এক বছরেরও বেশি সময় আগে মন্ত্রিপরিষদ থেকে সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠালেও তার কিছুই  এখনো সংশোধিত হয়নি। ওই খসড়া পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রণীত শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষাবিদরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন অধিশাখার কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তারা কাজ করছেন। তবে ওই কাজ কতটুকু অগ্রসর হয়েছে তা বলতে রাজি হননি তারা। এ বিষয়ে কাজ করা একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বিগত এক বছরেরও বেশি সময়ে শিক্ষা আইনের খসড়ার কোনো অগ্রগতি হয়নি। সে কারণেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

শিক্ষা আইনের খসড়ায় ব্যাপক অসামঞ্জস্য, বৈপরীত্য ও বিদ্যমান আইনের সঙ্গে অসঙ্গতি থাকায় গত বছর জুন মাসে ১২টি নির্দেশনা দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফেরত পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগেও একবার খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদে উঠলেও নানা অসঙ্গতি ও অবাস্তব বিষয়াদি থাকায় তা ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত বছরের জুনে এটি ফেরত পাঠানোর পর এক বছর দুই মাস সময় পার হয়ে গেলেও আইনের খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে পারেনি মন্ত্রণালয়।

স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত প্রায় এক ডজন শিক্ষা কমিশন গঠন এবং একাধিক শিক্ষানীতি ঘোষিত হলেও কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। এর প্রধান কারণ এক সরকারের গৃহীত নীতি পরবর্তী সরকার কর্তৃক বর্জন। কিন্তু ২০১০ সালে সর্বশেষ শিক্ষানীতি এই সরকার কর্তৃক হওয়ায় অতীতের সমালোচনা এখন আর ধোপে টিকছে না। বরং এক দশক আগে প্রণীত শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সরকার কেনো এখনো কোনো আইন তৈরি করতে পারল না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন ।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অতীতে শক্তিশালী কোন শিক্ষানীতিই ছিলো না। সেখানে এখন একটি শিক্ষানীতি আছে এটি ইতিবাচক। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা আইনের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দাবি, অচিরেই একটি শক্তিশালী শিক্ষা আইন পাস করা হোক।

একই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষাবিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদও। তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, শিক্ষাকে কোনো সরকারই প্রধান অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখেনি। জিডিপির ২ শতাংশের বেশি শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয়া হয়নি। অথচ শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া শিক্ষাখাতে ৪ শতাংশ বরাদ্দ দিচ্ছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button