শিপবিল্ডিং গেজেট বাস্তবায়ন কমিটির আমরণ অনশনের ডাক
চাকরির দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছে মেরিন শিপবিল্ডিং গেজেট বাস্তবায়ন কমিটি। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে তারা এ ঘোষণা দেয়।
এ সময় তারা ডিপ্লোমা শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারি নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা সংশোধন, চাকরির বাজার উন্মুক্তকরণসহ উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ১০ম স্কেলে ডিপ্লোমা মেরিন/শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারদের গেজেট আকারে মেকানিক্যাল ও পাওয়ার প্রকৌশলীদের সঙ্গে বিএমইটি চলমান মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানায়। তাদের দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারী দেয়।
মানববন্ধনে অংশ নেয় সারাদেশের চার শতাধিক মেরিন/শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ার। মানববন্ধনে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা জানান, বঙ্গবন্ধুকন্যার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত। আমাদের অগ্রগতি অনেক বিশ্বের দরবারে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। এমন একসময় ডিপ্লোমা মেরিন/শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রীর নজর এড়িয়ে যাবে না।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মেরিন শিপবিল্ডিং গেজেট বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাজিব। তিনি জানান, ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আমাদের সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিপ্লোমা ইন মেরিন ও ডিপ্লোমা ইন শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অজানা কারণে এখনো তার কোনো পরিকল্পনা দৃশ্যমান হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রত্যেকটি শিপ ইয়ার্ড, ডক ইয়ার্ড ও শিপ ডিজাইন ফার্মে ন্যূনতম দুই জন শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ার থাকার কথা। কিন্তু কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে এসব অঙ্গন।
শফিকুল ইসলাম রাজিব আরও জানান, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হন। তারপরই বেকারত্বের বোঝা কাঁধে চেপে বসে। এভাবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা বেকার হয়ে বসে থাকলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ পেতে সময় লেগে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মানববন্ধনে কমিটির উপদেষ্টা আদিল সাদ জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, কর্মকমিশন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন দফতরে সমরাস্ত্র কারখানায় ম্যাটালার্জি প্রকৌশলী, নেভাল ডিপ্লোমা, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেও কাজ করার দক্ষতা রাখি। এছাড়া রোল, গৃহায়ণ, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের অধীনেও কাজের সুযোগ রয়েছে আমাদের। এছাড়া কাজের দক্ষতা আমাদের কোথায় নেই। কিন্তু সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি সব ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ দ্রুত উন্মুক্ত করার দাবি জানান।
এ দিকে কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের আল-মনসুর দ্বীন মানববন্ধনে মেরিন ও শিপবিল্ডিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং দাবি মেনে না নিলে আমরণ অনশনসহ কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারী দেন।
এ বিষয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা গণমাধ্যমকে বলেন, চার বছরের ডিপ্লোমা কোর্সের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে যোগ্যতা অর্জন করা সত্ত্বেও সরকারি নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালায় গেজেটভুক্ত না থাকায় তারা সরকারি চাকরীর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা শেষ করে সরকারের প্রতিটি দফতরে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারে, কিন্তু তাদের আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই। তারা এই দ্বৈতনীতির অবসান চান।
নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে তারা আরও জানান, দীর্ঘ বিশ বছরের বেশি সময় ধরে এ ব্যাপারে বহুবার আবেদন জানিয়ে আসছেন তারা। আর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বার বার আশ্বাস দেওয়া হলেও তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। এ অবস্থায় তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।