ক্যাফেন আসক্তি দূর করুন
অফিস ডেডলাইনের স্ট্রেস কমাতে বা নিদেনপক্ষে আড্ডার আসর জমাতে এক পেয়ালা গরম কফির কোনও তুলনাই হয় না! কিন্তু ঘনঘন কফি খেলে ক্যাফেন-অ্যাডিক্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্যাফেন-অ্যাডিক্টরা হরমোনের সমস্যা, ইনসমনিয়া ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যায় পড়েন। সঠিক ডায়েটে মেনে কিন্তু ক্যাফেন অ্যাডিকশন সহজেই কাটানো যায়। কফি অ্যাডিকশনের মোকাবিলা করার জন্য রইল বিশেষ ডায়েট।
অনেকেরই ধারণা কফি মস্তিষ্কের তীক্ষ্ণতা এবং সতর্কতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঘুম তাড়াতে মাত্র এক কাপই যথেষ্ট। এক কাপ কফিতে মোটামুটি ৬০-৭০ মিলি. ক্যাফেন থাকে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, কফিতে থাকা ক্যাফেন অ্যাংজ়াইটি, বিরক্তিভাব, রাগ, প্যানিক অ্যাটাক ইত্যাদি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ক্যাফেন মস্তিষ্কের স্বাভাবিক অবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় বলে ‘ওয়েক-আপ এফেক্ট’ দেখা যায়। অ্যাড্রিনালিন হরমোনের লেভেল বাড়িয়ে দেয় বলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসব কারণে কফির প্রতি ভালবাসা ধীরে ধীরে আসক্তিতে পরিণত হয়। যত দিন যায়, ততই, একই প্রভাব পাওয়ার জন্য কফির পরিমাণ বাড়তে থাকে। প্রতিদিনের চাহিদা পূরণ না হলেই শরীরে বেশ কিছু অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। মাথাব্যথা, চোখের চারপাশে ব্যথা, ঝিমুনি, ঘুমঘুম ভাব ইত্যাদি।
আপনি কতটা বিপদে আছেন?
আপনার প্রতিদিনের কফির হিসাব করলেই বুঝতে পারবেন আপনি কফির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন কি না। যদি আপনি প্রতিদিন দু’কাপ বা তার কম কফি খান, তাহলে আপনার চিন্তার কারণ নেই। এই আসক্তি কফি খাওয়ার পরিমাণের পাশাপাশি বয়স, লিঙ্গ, কফির প্রতি সেনসিটিভিটি ইত্যাদিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রতিদিনের কফির পরিমাণ ৫০০ মিলি.-র বেশি হলেই কিন্তু লং রানে আপনার বিপদে পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।
আসক্তি কমাতে ডায়েট
যাঁরা লেখা পড়ে ভাবছেন, যে তিনি ডেঞ্জার জ়োনে রয়েছেন, তাঁদের কিন্তু ডায়েটই ভরসা। কিছু টুকটাক পরিবর্তন করলেই হবে অবশ্য।
প্রথমেই বলব জল খাওয়া বাড়ান। দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস জল খেতেই হবে। খালি পেটে জল খাওয়াও ভাল।
কফির বিভিন্ন সাবস্টিটিউট খেতে পারেন। হারবাল টি (ক্যাফেন থাকে না), ব্ল্যাক টি (ক্যাফেনের পরিমাণ কফির তুলনায় অর্ধেক) খেতে পারেন।
ডায়েট রেগুলেট করুন। অ্যালকালাইন ডায়েট খাওয়ার চেষ্টা করুন। স্টিমড ভেজিটেবলস, স্যালাড, স্যুপ, ফ্রেশ কর্ন, হোল গ্রেন, সয়া প্রোডাক্ট, বাদাম, স্প্রাউটস, টাটকা ফল, কিশমিশ, তিল ইত্যাদি বেশি করে রাখুন ডায়েটে।
অ্যাসিডিক খাবার যেমন মাংস, চিনি, ময়দা ইত্যাদির পরিমাণ অবশ্যই কমাতে হবে।
ভিটামিন এবং মিনারেলস-এরও যেন ঘাটতি না হয়। মাথাব্যথা, ঝিমুনি কমাতে বিটামিন সি, বি-কমপ্লেক্স ইত্যাদি বেশি করে খান। এগুলো আপনার এনার্জি বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।