স্বাস্থ্য

পুষ্টি সংক্রান্ত যে ভুলগুলো আপনাকে মোটা বানিয়ে দিচ্ছে !

একটু সুস্থ থাকার জন্য আমরা কতকিছু করি। কিন্তু সুস্থ থাকার মন্ত্র কী? কোন কোন নিয়ম মেনে চলছেন আপনি নিজের স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখার জন্য? আসলেই কি সেগুলো কোনো কাজের, নাকি ভুল কিছু নিয়ম মেনে আরও বেশি স্থুল ও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আপনি? চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক আপনাকে স্থুল করে দিতে পারে এমন কিছু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ভুল ধারণা-

সব ক্যালোরিই সমান:-

আসলেই কি তাই? একদম নয়। আপনি সবজি থেকে যে ক্যালোরি পাবেন, সেই ক্যালোরি কিন্তু একটি বার্গার থেকে পাওয়া ক্যালোরির সমান নয়। বার্গার থেকে পাওয়া ক্যালোরি অস্বাস্থ্যকর। সবজি থেকে পাওয়া ক্যালোরি তেমন নয়। ক্যালোরির মধ্যে ভালো ও খারাপ দুই ধরণই আছে। এজন্যই কিছু ক্যালোরির কারণে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং কিছু ক্যালোরি তাকে সুস্থ করে দেয়। চেষ্টা করুন এমন ক্যালোরি গ্রহণ করতে যেটি শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর।

লো-ফ্যাট খাবার খাওয়াই ভালো:-

মূলত, বাজারে যে লো-ফ্যাট খাবারগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর বেশিরভাগই আমাদের আরও বেশি ক্ষুধার্ত করে তোলে। অনেকসময় স্বাদ বারানোর জন্য সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণ চিনি মেশানো হয়। যেটি শরীরের ভালো নয়, খারাপ করে।

তাই, লো-ফ্যাট খাবার খাওয়ার চাইতে এমন খাবার খান যেটি অস্বাস্থ্যকর নয় এবং আপনার পেটও ভরিয়ে দেবে। এই যেমন, দই খাওয়ার সময় লো-ফ্যাট দই না খেয়ে সাধারণ দই খেয়ে নিন। এতে করে সুস্থ থাকতে পারবেন আপনি আরও বেশি।

প্রোটিন খাওয়া যাবে না:-

আপনি যদি আপনার ওজন কমাতে চান এবং সুস্থ থাকতে চান তাহলে প্রটিন খাওয়ার চাইতে ভালো কোনো উপায় থাকতেই পারে না। প্রোটিন আমাদের হজমে সাহায্য করে এবং পেট ভরিয়ে দেয় সহজেই। আমাদের ক্ষুধাবোধ বাড়িয়ে তুলতেও এটি সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি ওজন কমাতে চান, প্রোটিন গ্রহণ করা আপনার জন্য বেশ বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না:-

আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে আমাদের পেট অনেক বেশি সময় ভর্তি থাকে। ক্ষুধা কম পায়। গবেষণায় দেখা যায় যে, পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ খেলে আমরা সারাদিনে ১৩০ ক্যালোরি কম গ্রহণ করি। এছাড়া, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। শরীরের ক্যালোরি পোড়াতে এটি বেশি সাহায্য করে। তাই আঁশযুক্ত খাবার বাদ দেওয়ার চিন্তা মোটেও করবেন না।

সকালের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না:-

অনেকেই ভেবে থাকেন যে, সকালের খাবার বাদ দিলে মানুষ দুপুরে বেশি ক্ষুধার্ত থাকে এবং অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলে। কথাটি সত্যি। তবে তার মানে এই নয় যে, সেই খাবারের কোন নেতিবাচক প্রভাব আমাদের শরীরের উপরে পড়ে। আপনাকে যদি সারাদিনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করতে বলা হয়, সেটা সকালে হোক কিংবা রাতে, একবারে হোক বা দুইবারে- যেভাবেই গ্রহণ করা হোক না কেন, সেটি ঠিক সমান প্রভাবই রাখবে আপনার ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে। এ নিয়ে চিন্তা করার খুব বেশি কিছু নয়।

সারাদিনে একটু পরপর অনেকবার খাওয়া উচিত:-

অনেকেই হজমের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে, ওজন কমাতে এই কাজটি করেন। আসলে, এতে করে আপনার ওজন আরও বেশি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, এই নিয়ম অনুসরণ করলে একটা সময় আপনি হয়তো আপনার অজান্তেই অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন। আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটি খুব স্বাভাবিক এবং খাবারের পরিমাণ অল্প মনে হলেও একবারে আপনি যে পরিমাণ খাবার খান, এই পদ্ধতিতে তার চাইতে বেশি খাবার আপনি খেয়ে ফেলেন।

এমন আরও হাজারটা নিয়মের কথা আপনাকে সবাই বলতে পারে ওজন কমানোর জন্য। সব নিয়ম যে ভুল তা নয়। তবে কোনো নিয়ম অনুসরণ করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে, আসলেই সেটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য, ওজন ঠিক রাখার জন্য সঠিক, নাকি ভুল।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button