হবু কনেদের ডায়েট
বিয়ে সব নারীর জীবনেরই অন্যতম প্রধান এবং গুরত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জীবনের এই বিশেষ দিনটি নিয়ে সবার মনেই নানা ধরনের পরিকল্পনা থাকে। সকলেই চান বিয়ের দিন আকষর্ণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে। তাই মূল অনুষ্ঠানের প্রায় মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয় তার প্রস্তুতিপর্ব। সাজগোজ থেকে পোশাক—সুন্দর দেখাতে এ সবের ভূমিকা থাকলেও, আসল কিন্তু শরীরের যত্ন। আর সুস্থ শরীর মানে সেখানে ডায়েটের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই অন্যান্য সব প্রস্তুতির পাশাপাশি হবু কনেদের সঠিক ডায়েট এবং লাইফস্টাইল মডিফিকেশনও একান্ত প্রয়োজনীয়। বলাই বাহুল্য, এক্ষেত্রে রাতারাতি ফলের আশা করা বৃথা। বিয়ের ছয় মাস, সম্ভব না হলে অন্তত তিন মাস আগে থেকে শরীরের যত্ন নেওয়া শুরু করুন। সুতরাং, যাঁরা সামনের মরশুমেই শুভ কাজটি সেরে ফেলতে চলেছেন, তাঁদের এখন থেকেই যত্ন নেওয়া শুরু করে ফেলা উচিত। সঠিক যত্নে শরীরের পাশাপাশি ত্বক এবং চুলও সুন্দর হয়ে উঠবে। আর সেই সঙ্গে বিয়ের সাজে আপনি হয়ে উঠবেন অনন্যা।
বিয়ের আগে রোগা হতে অনেকেই হুটহাট করে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেন। কিংবা খাবারের পরিমাণ হঠাৎ এতটাই কমিয়ে ফেলেন, যে শরীরে উলটো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কী খাচ্ছেন এবং কতটা খাচ্ছেন, তা অবশ্যই মনিটর করা উচিত। কিন্তু নিজেরাই নিজেদের ডায়েটিশিয়ান না হয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দিনে মেপে মেপে ৮-১০ গ্লাস জল খাওয়া অভ্যেস করুন। প্রতিদিন ডাবের জল খেতে পারলে খুব ভাল। এতে হজম ভাল হয়। এর সঙ্গে ক্যালশিয়াম রিচ খাবার, যেমন টকদই, আমন্ড, ডাল ইত্যাদিও প্রতিদিনের ডায়েটে রাখুন।
টাটকা সবজির রস খেলে ত্বক ভাল থাকবে। টোম্যাটো, গাজর, লাউ, বিট, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, আমলকি ইত্যাদির রস (একসঙ্গে বা আলাদাভাবে) খেতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত ২ গ্লাস সবজির রস খান।
৫ ইঞ্চি কাঁচা হলুদ বেটে তা ৫০-৬০ মিলি জলে ফুটিয়ে নিন। অথবা কাঁচাও হলুদবাটা ৫০-৬০ মিলি জলে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে একটা গোটা পাতিলেবুর রস এবং সামান্য নুন মিশিয়ে প্রতিদিন খাওয়া অভ্যেস করুন। এতে শরীরে থাকা টক্সিন দূর হবে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে (৫-৮ সার্ভিং) টাটকা ফল এবং সবজি রাখুন। এক সার্ভিং প্রায় আধকাপ সিদ্ধ সবজি বা এককাপ স্যালাডের সমান। এক প্লেট খাবারের মধ্যে অর্ধেক যেন সবজি থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
ডায়েটে প্রতিদিন ৪০-৪৫ গ্রাম প্রোটিন রাখুন। মাছ, ডিমের সাদা অংশ, ডেয়ারি প্রডাক্ট ইত্যাদি রাখলে মাসল টোনড হবে। ফলে ত্বকও দৃঢ় হয়ে উঠবে।
টাটকা কমলালেবুর রস ত্বক এবং চুলের জন্য খুব ভাল। ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খুব ভাল উৎস এই ফল। ডায়েটে কমলালেবু রাখুন।
অ্যাকনের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা ডায়েটে কম পরিমাণে ফ্যাট রাখুন।
রিফাইন্ড খাবার বা ময়দা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, যেমন রুমালি রুটি, নান, ন্যুডলস ইত্যাদি খেলে শরীরে অতিরিক্ত জল জমতে পারে। ফলে এই ধরনের খাবার যতটা সম্ভব কম খান।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং ঘুমও খুব দরকার। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। যতটা সম্ভব অ্যাক্টিভ থাকুন।