অপেক্ষায় নিখোঁজদের স্বজনেরা
যুক্তরাজ্যের এসেক্সে একটি কন্টেইনার লরি থেকে ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উন্নত জীবনের আশায় তারা যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। মরদেহ ফিরে পেতে তাদের স্বজনেরা এখন দিন গুণছেন।
গত বুধবার এসেক্সে একটি কন্টেইনার লরি থেকে মরদেহগুলি উদ্ধার করা হয়। এদের বেশিরভাগই ভিয়েতনামের নাগরিক। এ ঘটনার পর থেকে ভিয়েতনামের নিখোঁজ নাগরিকদের ছবি হাতে নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের স্বজনদের।
এ ঘটনায় মরিস রবিনসন নামে ২৫ বছর বয়সী লরি চালককে আটক করেছে পুলিশ। ৩৯ জনকে হত্যার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে মানব পাচার, অভিবাসন ও অর্থ পাচারেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর সিএনএনের।
রবিনসন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের আর্মাগ কাউন্টির পোর্টাডাউনের বাসিন্দা। তাকে সোমবার আদালতে পেশ করা হবে।
লরির ৩৯ মরদেহের মধ্যে ১৯ বছর বয়সী ভিয়েতনামের বুই থি নুংও আছেন বলে আশঙ্কা করছেন তার স্বজনেরা।
মনে করা হচ্ছে মৃতদের মধ্যে নুং সবচেয়ে কমবয়সী।
বুধবার লরি থেকে মরদেহগুলি উদ্ধারের পরে ভিয়েতনামের বহু পরিবার তাদের স্বজনদের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানিয়েছেন। এনগুইন দীন লুং (২০) ও নুগেইন দিন তু নামের দুইজনও নিখোঁজ আছেন বলে জানা গেছে।
এদের মধ্যে ভিয়েতনামের উপকূলীয় প্রদেশ হা তিনহে বসবাসকারী নুয়েন থি ফাম ও ফেম ভান থিন দম্পতির মেয়ে ফেম থি তারা মাইও রয়েছে।
২৬ বছর বয়সী ফেম থি তারা মাই যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে তার মা–বাবাকে মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠান। খুদে বার্তায় তিনি লেখেন, ‘বাবা, মা-আমি দুঃখিত। যে পন্থায় আমি বিদেশে আসতে চেয়েছিলাম, তা আর সফল হচ্ছে না। মা, আমি বাবাকে অনেক ভালোবাসি। তোমাকেও। আমি মরে যাচ্ছি। কারণ, আমি শ্বাস নিতে পারছি না। ভালো থেকো তোমরা। মা, আমি দুঃখিত।’
যুক্তরাজ্য সরকার নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ শনাক্তের জন্য ভিয়েতনামের সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ভিয়েতনামে যাদের পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ বলে জানিয়ছেন তাদের স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, লরিটিতে ১০০ জন ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। এরপর থেকে আমরা আরও গভীরভাবে ঘটনাটির তদন্ত করছি।
এ ঘটনায় লরিচালক বাদে আরও তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মানব পাচারের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
লরি থেকে মরদেহগুলো উদ্ধারের পর শারীরিক গঠন দেখে বলা হয়েছিল, নিহতরা চীনের নাগরিক। তবে পরে খবর বের হয়, নিহত ব্যক্তিদের অনেকেই ভিয়েতনামের নাগরিক।
পুলিশ জানিয়েছে, শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিকটিমদের সঙ্গে ছিল না। আর তাই তাদের শনাক্ত করতে হাতের ছাপ, ডিএনএ টেস্টসহ নানা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।