আন্তর্জাতিক

বর্ষণ উপেক্ষা করে হংকংয়ের রাজপথে বিক্ষোভকারীরা

বিতর্কিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল ইস্যুতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন মোড় নিয়েছে গণতন্ত্রের আন্দোলনে। নিজেদের অধিকার আদায়ে এখন হংকংয়ের রাজপথে লাখ লাখ গণতন্ত্রকামী মানুষ। নিজেদের আধা-স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলে চলমান গণতন্ত্রকামীদের এ আন্দোলন ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে চীন, দিয়েছে হুঁশিয়ারিও।

আন্দোলনের মুখে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিতর্কিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম। এরপরও থামেনি গণতন্ত্রকামীদের এ আন্দোলন। ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, বরং দিনকে দিন আন্দোলনকারীর সংখ্যা যেন আরও বাড়ছেই।

সবশেষ রোববারেও (৬ অক্টোবর) ভারী বর্ষণ উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের রাজপথে নেমেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

চলমান এ আন্দোলন ঠেকাতে হংকংয়ের রেলওয়ে অপারেটর সার্ভিসকে সব ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। পরবর্তীতে রেলসেবা ফের চালুও করা হয়। এর আগে মুখোশ পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেখানকার হাইকোর্ট।

এসব বাধা-নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করেই নিজেদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। পরিধান করেছেন নিষিদ্ধ মুখোশও।

অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের রুখতে গুলি চালায় পুলিশ। সেই সময় দু’জন বিক্ষোভকারী আহত হলে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। পথে নামে আরও বিক্ষোভকারী।

হাসুন লি নামে এক বিক্ষোভকারী বার্তাসংস্থা এএফপি’কে বলেন, আমাদের ধারণা, পরবর্তীতে আরও জরুরি আইন জারি হতে পারে। মুখোশ পরিধানে নিষেধাজ্ঞা প্রথম পদক্ষেপ মাত্র।

এদিকে, যে কোনোভাবে সহিংসতা রুখতে প্রস্তুত ক্যারি ল্যাম। তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় হংকংয়ের আর কোনো ক্ষতি করতে দেবো না। বিক্ষোভকারীদের ‘তীব্র সহিংসতা’ রুখতে মুখোশের নিষেধাজ্ঞা জরুরি ছিল বলেই উল্লেখ করেন ল্যাম।

অপরাধ প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিগত প্রায় ছয় মাস ধরে বিক্ষোভে উত্তাল গোটা হংকং। যে বিক্ষোভ এখন মোড় নিয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলনে। বিক্ষোভের মুখে অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম বিলটি বাতিলের ঘোষণা দিলেও বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন এখন আর থামছে না।

অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী, চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূ-খণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে তাকে ফেরত দিতে হবে।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে হংকংয়ের এক তরুণ তাইওয়ানে এক নারীকে হত্যা করে হংকংয়ে চলে আসেন পালিয়ে। তখন তরুণকে বিচারের মুখোমুখি করতে তাইওয়ান ফেরত চাইলে হংকং আইনি জটিলতার কথা বলে। এ প্রেক্ষাপটে প্রত্যর্পণ আইনটি হংকংয়ের নিজস্ব আইনে প্রণীত করার প্রস্তাব আসে।

সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকং ১৯৭৭ সালে চীনের অধীনে ফেরার পর থেকে ‘এক রাষ্ট্র দুই নীতি’র অধীনে পরিচালিত। যদিও গত দুই দশক ধরে নানা ইস্যুতে চীন সরকারের সঙ্গে কড়াকড়ি চলছে অঞ্চলটির।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button