বাহামায় ডোরিয়ানের ধ্বংসযজ্ঞ, নিহত বেড়ে ৭
পাঁচ মাত্রার হারিকেন ডোরিয়ানের তাণ্ডবে বাহামা দ্বীপপুঞ্জে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাড়িয়েছে। দানবীয় এই ঝড়ে অন্তত ১৩ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘণ্টায় ২৭০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে রবিবার বাহামাসের গ্রেট আবাকো ও গ্র্যান্ড বাহামা দ্বীপে আঘাত হানে প্রলয়ংকরী এ ঘূর্ণিঝড়।
বাহামা দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী হুবার্ট মিনিস বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আবাকো দ্বীপেই ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। মিনিস বলেছেন, আরো দুইজনের প্রাণহানি ঘটায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, “মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আমরা আশংকা করছি।”
ডোরিয়ান স্থলভাগে উঠে আসার সময় প্রবল ঝড়ো হওয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৮ থেকে ২৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে উপকূল প্লাবিত হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, হারিকেনের প্রভাবে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। বহু গাছ উপড়ে গেছে, উলটে আছে গাড়ি। জলোচ্ছ্বাসে পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত বহু পরিবারকে ছাদের ওপর আশ্রয় নিতেও দেখা গেছে।
স্থানীয় সাংবাদিক ক্লিন্ট ওয়াটসন জানিয়েছেন, গ্র্যান্ড বাহামা দ্বীপে প্রবল বর্ষণ চলছে। তিনি একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন, যেখানে ঘরের ছাদের কাছাকাছি পানি উঠে আসতে দেখা গেছে। বাহামা দীপপুঞ্জের ৭০০ দ্বীপের অধিকাংশেই বিদ্যুত্ চলে গেছে ও ইন্টারনেটে যোগাযোগের পথও সীমিত হয়ে পড়েছে অনেকটা।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, ডোরিয়ান এখনো বাহামা দ্বীপপুঞ্জের ওপর অবস্থান করছে এবং গ্র্যান্ড বাহামা দ্বীপে তাণ্ডব চালাচ্ছে। স্থলভাগে উঠে আসার পর ডোরিয়ান সামান্য দুর্বল হলেও বাতাসের গতি এখনও ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটারের বেশি, যা চার মাত্রার হারিকেনের সমতুল্য।
ডোরিয়ান আরো কয়েকদিন হারিকেনের শক্তি ধরে রাখবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের খুব কাছ দিয়ে বেরিয়ে যাবে বলে ধারণা করছে এনএইচসি। তবে সামান্য দিকবদল করলেও এ ঝড় সরাসরি ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় জরুরি সতর্কতা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু করার পর থেকে আটলান্টিক অঞ্চলের দ্বিতীয় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এটি। আর বাহামাসে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী হারিকেন।