রংপুর বিভাগসারাদেশ

সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালকে নমুনা পরীক্ষা ও করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত রাখতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসক সংকটে থাকা রোগীশূন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালকে করোনার নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখতে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে এবার নির্দেশ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
গতকাল দুপুরে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) মিহির কান্তি গুহ। দীর্ঘদিন পর রেলওয়ে হাসপাতালটিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, ১৮৭০ সালে রেলওয়ে কারখানা স্থাপিত হওয়ার পর রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা সেবার জন্য শহরের উত্তরাংশে নির্মাণ করা হয় হাসপাতালটি। ৮২ শয্যার ওই হাসপাতালে সৃষ্টপদ ছিল ১৫২ জন। কিন্তু দিন দিন রেলওয়েতে কর্মরতদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে হাসপাতালটি। বর্তমানে হাসপাতালটি রোগীশুন্য হলেও কমর্রত আছে ৭৬ জন। অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে রুম, সার্জারি ওয়ার্ড, সাধারণ ওয়ার্ড, মহিলা ওয়ার্ড, কেবিনসহ চিকিৎসার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। রোগীর চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে ফুলের বাগান ও পানির ফোয়ারা। দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো ও মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে হাসপাতালটি অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় রোগীদের জন্য বেশ চিত্তাকর্ষক।
এসব সুযোগ-সুবিধার বিবেচনায় হাসপাতালটিকে করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসায় ব্যবহারের দাবি ওঠে সাধারণ লোকজনসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি মহল থেকে। তাদের মতে, অলস পড়ে থাকা হাসপাতালটি ব্যবহার করার এখন উপযুক্ত সময়। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রুহুল আমিন মাষ্টার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সৈয়দপুরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেক্ষেত্রে ব্যাপক হারে রক্তের নমুনা পরীক্ষার করার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ঝামেলা পোহাতে হয় এবং রংপুর, দিনাজপুর থেকে নমুনার ফলাফল পেতেও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। তাই ওই হাসপাতালটিকে নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত ও করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার উপযোগী করে তোলার দাবী জানান তিনি।
সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, সম্প্রতি জেলা কমিটির একটি সভায় হাসপাতালটি ব্যবহারের জন্য আমি নীলফামারী জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি। মূখ্যসচিব মহোদয়ের আন্তরিকতার কারণেই রেলপথ মন্ত্রণালয় হাসপাতালটিকে করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালের বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা (ডিএমও) ডা. আনিসুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কম। কিন্তু হাসপাতালের যাবতীয় অবকাঠামোসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুত রয়েছে। তবে চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করলে হাসপাতালটিতে করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) মিহির কান্তি গুহ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবং স্থানীয়দের দাবীর প্রেক্ষিতে রেল মন্ত্রণালয় সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালটিকে ব্যবহারের প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক তা ব্যবহার করা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button