আন্তর্জাতিক

মুদ্রা বিপর্যয়ের শঙ্কা, কদর বাড়বে সোনা-রূপার

ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হবে তা নিয়ে নানা বিষয়ে নানাজনের বিভিন্ন রকমের মত রয়েছে। ছাপানো মুদ্রা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন মার্কিন ব্যবসায়ী রবার্ট কিয়োসাকি। বিশ্ব অর্থনীতির সর্বনাশ এবং বিষণ্ণ দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন তিনি।

তিনি আরো বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বাজার টিকিয়ে রাখতে বহু দেশ বেশি পরিমাণ মুদ্রা ছাপানো অব্যাহত রেখেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এমন এক দিন আসবে, যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং জিম্বাবুয়ের মুদ্রার মান এক হয়ে যাবে।

কিয়োসাকির ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলার। ৩২ মিলিয়ন পাঠক তার লেখা ‘রিচ ড্যাড, পোর ড্যাড’ বই পড়তে চেয়েছেন। এই ভদ্রলোককে ওয়ারেন বাফেটের মতো শ্রদ্ধাভাজন লোকের সঙ্গে অনেকেই মিলিয়ে থাকেন। কিয়োসাকি প্রায়ই বর্তমান অর্থনৈতিক জলবায়ুর দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক বেশি খোলামেলা কথা বলেন।

তিনি উল্লেখ করেছেন যে, করোনা মহামারি চলা অবস্থায় অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন দেশ অর্থ মুদ্রণ করছে; এটাই বিশ্ব অর্থনীতির বড় সমস্যা।

তিনি আরো বলেছেন, এক বছরে তারা বিশ্বের জিডিপির ১৬ শতাংশ মুদ্রণ করেছে। এখন প্রশ্ন হলো- কতদিন তারা এভাবে চালাতে পারবে?

যে কোনো অর্থনীতিতে ক্রমাগত বিপুল পরিমাণ অর্থ মুদ্রণ করার বিষয়টি অবশ্যই টেকসই নয়। সে ক্ষেত্রে মানুষজনকে কেবল বেশি পরিমাণ অর্থ গুনতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে হিসাব করতে হচ্ছে মিলিয়ন কিংবা ট্রিলিয়নে।

কিয়োসাকি নিজে মুদ্রার চেয়ে সোনা এবং রূপা অনেক বেশি পছন্দ করেন। তিনি বলেন, আমি সবসময় বলি যে কিভাবে কিংবা কী ঘটতে যাচ্ছে সেজন্য নয়; আমি বর্তমান সম্পর্কে যত্নশীল যে, আপনার কাছে কী পরিমাণ (সোনা, রূপা) আছে। কারণ, কয়েক বছরের মধ্যে আপনি আরো বেশি পরিমাণ সোনা রূপা কিনতে চাইবেন।

যদিও সাধারণ মানুষের মধ্যে কাগজের মুদ্রার প্রতি ঝোঁক রয়েছে। তবে কিয়োসাকি জোর দিয়েছেন সোনা ও রূপার ওপর। এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, বর্তমানে এক আউন্স রূপার দাম ২০.৩৮ মার্কিন ডলার। যদি কোনো কারণে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটে এবং মুদ্রার দরপতন হয়, তার পরেও কিন্তু রূপার মান ঠিক থাকবে।

তিনি আরো বলেছেন, বিভিন্ন দেশের ঋণের পরিমাণ এতো বেশি যে, যদি তারা মুদ্রা ছাপানো বন্ধ করে, তাহলে তাদের বিপর্যয় ঘটবে। অথচ স্বর্ণের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আরও বেশি লোক সোনা ও রূপা কেনার দিকে ঝুঁকছে। যারা দ্রুত এই প্রবণতার বিষয়টি ধরতে পারছে না, তারা ছিটকে পড়ছে। তাদের জন্য সোনা কেনা কঠিন হতে পারে; এমনকি তারা আর সোনা নাও কিনতে সক্ষম হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি পরবর্তী ৫০ বছরের গোপন বিষয় হলো- মানুষ আর কোনো টাকা জমাতে চাইবে না। এমন এক সময় আসবে, যখন জিম্বাবুয়ের মতো দেশে সাধারণ কোনো চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে ১০০ ট্রিলিয়ন জিম্বাবুয়ান ডলার গুনতে হবে। যেটা কেউ চাইবে না।

সে কারণে কিয়োসাকি মনে করেন, মানুষ যখনই বিষয়টি বুঝে যাবে, সোনা ও রূপার কদর বহুগুণ বেড়ে যাবে।
সূত্র: এমএসএন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button