আন্তর্জাতিক

‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ আর বলবে না লুফথানসা বিমান সংস্থা

জার্মান বিমান পরিবহন সংস্থা লুফথানসা তাদের ফ্লাইটে যাত্রীদের অভিবাদনের ধরনে পরিবর্তন আনছে। এখন থেকে ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষ’ শব্দ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান পরিবহন সংস্থাটি।

‘প্রিয় ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ ফ্লাইটে আপনাদের স্বাগতম’ , জার্মান ভাষায় এখন থেকে যাত্রীদের উদ্দেশে এমন সম্ভাষণ জানাবে না লুফথানসা। তার বদলে ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষ’ ভাষা ব্যবহার করবে লুফথানসা গ্রুপের অধীনে থাকা সবগুলো এয়ারলাইন্স। যার মধ্যে আছে অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্স, সুইস ও ইয়রোউইংসও। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র আনিয়া স্টেনগার জানান, লুফথানসার ক্রুরা যাত্রীদের ‘প্রিয় অতিথি’, ‘শুভ সকাল/শুভ সন্ধ্যা’ অথবা শুধু ‘ফ্লাইটে স্বাগতম’ এমন বাক্য ব্যবহার করবে। পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হলেও যাত্রীদের কিভাবে সম্ভাষণ করা হবে। তবে সেটি চূড়ান্তভাবে ক্রুদের উপরই ছেড়ে দেয়া হয়েছে।এ বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও। বিলেফেল্ড ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ আনিয়া স্টেনগার বলেন, এটি একটি ‘লিঙ্গ সংবেদনশীল’ পদক্ষেপ। বিশেষ করে যারা নারী, পুরুষের বাইরে নিজেদের পরিচিত করতে চান, কিংবা যারা শুধু নারী-পুরুষ পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেন, তাদের জন্য ‘ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ’ এমন সম্ভাষণ পরিবর্তন করা প্রয়োজন।বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ভাষার ব্যবহারে ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষতা’ বজায় রাখার উদ্যোগ নিচ্ছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় কমিশনও নতুন গাইডলাইন আরোপ করেছে। ইউরোপীয়ান ইনস্টিটিউট ফর জেন্ডার ইক্যুয়েলিটির ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষতার’ সংজ্ঞা অনুযায়ী, ভাষা হবে এমন যেখানে কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গের উল্লেখ থাকবে না, নারী ও পুরুষের বাইরে মানুষকে সাধারণভাবে চিহ্নিত করা হবে।২০১৮ সালে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট ভাষাগত লিঙ্গ নিরপেক্ষতার গাইডলাইন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছে নির্দিষ্ট কোনো লিঙ্গের প্রতি পক্ষপাত, বৈষম্য বা হেয় করা অর্থ দাঁড়ায় এমন শব্দ এড়ানোই লিঙ্গ নিরপেক্ষ ভাষার উদ্দেশ্য।জার্মান ভাষায় বিভিন্ন পেশায় নারী-পুরুষ বিভাজন করা বিশেষ্যগুলো পরিবর্তন করে লিঙ্গ নিরপেক্ষ শব্দ চালুরও দাবি উঠছে। এ নিয়ে অবশ্য বিতর্কও আছে। যারা পরিবর্তনের পক্ষে, তারা মনে করেন বিদ্যমান শব্দগুলোতে নারী বা পুরুষ হিসেবে যারা নিজেদের চিহ্নিত করেন না বা লিঙ্গ পরিচয়ের প্রথাগত ধারণায় বিশ্বাসী নন, তাদেরকে আমলে নেয়া হয় না। অন্যদিকে বিরোধীরা ব্যাকরণের পরিবর্তনকে ভাষার উপর আঘাত হিসেবে অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button