আন্তর্জাতিক

সরকারবিরোধী টানা বিক্ষোভে উত্তাল ইরাক, নিহত আরও ৬৩

নিরাপত্তাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযান ও ধরপাকড় উপেক্ষা করে হাজার হাজার ইরাকি দেশটির রাজধানী বাগদাদের কেন্দ্রীয় তাহরির স্কয়ারে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন। সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভের শুরু থেকেই নিরাপত্তাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে রাবার বুলেট, গুলি বর্ষণ ও হাত বোমার বিস্ফোরণও ঘটালেও বিক্ষোভরত জনতা রাজপথ ছেড়ে যাননি।

গত কয়েকদিনের টানা এই বিক্ষোভ থেকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৬৩ জনের প্রাণ গেছে।

ইরাকের আধা সরকারি মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের তথ্য বলছে, বিক্ষোভে দ্রুত প্রাণহানির সংখ্যা বাড়লেও রাজধানী বাগদাদে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত অব্যাহত রেখেছেন।

ইরাকি পতাকা মাথায় জড়িয়ে একজন বিক্ষোভকারী ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি পুরো সরকারকে টেনে নামানোর জন্য, সরকারকে ছুড়ে ফেলার জন্য।’

তিনি বলেন, আমরা তাদের একজনকেও আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না। আর সেটা সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ হালবুসি কিংবা প্রধানমন্ত্রী আবদেল মাহদি হোক না কেন। আমরা পুরো শাসনব্যবস্থার শেষ চাই। এদিকে, রাজধানী বাগদাদের গুরুত্বপূর্ণ সব ভবন রক্ষার জন্য রোববার বাগদাদে দেশটির এলিট কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিসের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

দেশটির এলিট এই বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভ এবং বিক্ষোভকারীদের মাঝে যাতে সুযোগসন্ধানীরা অনুপ্রবেশ না করে সেজন্য কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিসের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভের সময় অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনার সুরক্ষায় কাজ করবে কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিস।

এর আগে শনিবার বিক্ষোভকারীরা বাগদাদে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, সরকারি ভবন ও স্থাপনায় প্রবেশের চেষ্টা চালান বিক্ষোভকারীরা। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এ সময় টিয়ার গ্যাসের আঘাতে অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের নাসিরিয়া শহরে স্থানীয় সরকারি এক কর্মকর্তার বাড়িতে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালালে সেখানে পুলিশের গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

অর্থনৈতিক সঙ্কট, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি লাগাম টানতে ইরাকের ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলতি মাসের শুরুর দিকে ধীরে ধীরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে অক্টোবরের মাঝের দিকে এসে এই বিক্ষোভ ক্রমান্বয়ে তীব্র আকার ধারণ করায় সরকারি বাহিনী বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থানে যায়।

সরকারি আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ, সংঘাত ও সহিংসতাংয় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। চলমান এই অস্থিরতায় প্রায় দুই বছরের স্থিতিশীল ইরাকে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button