লিড নিউজ

অবসরের পর অপরাধ করলেও সরকারি সুবিধা বহাল থাকবে

সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর ‘গুরুতর’ কোনো অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তার অবসর-সুবিধা ‘আংশিক’ বা ‘সম্পূর্ণ’ বাতিল করার সুযোগ আছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। আইনের এ সংক্রান্ত উপধারাটি বাতিল করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।

স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৭ বছর পর ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে সরকারি কর্মচারী আইন প্রণয়ন করা হয়। কার্যকর হয় ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর। এই আইনে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের বিষয়ে সরকারের অনুমোদন নেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। কিন্তু সেই সমালোচনা আমলে নেওয়া হয়নি।

 

 

 

সরকারি চাকরি আইনের ‘অবসর-সুবিধা স্থগিত, প্রত্যাহার ইত্যাদি’ শীর্ষক ৫১ ধারার ৪ উপধারায় বলা আছে, ‘অবসর-সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি গুরুতর অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত বা কোনো গুরুতর অসদাচরণে দোষী সাব্যস্ত হইলে, কারণ দর্শাইবার যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাহার অবসর-সুবিধা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বাতিল, স্থগিত বা প্রত্যাহার করিতে পারিবে।’

 

 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি সোমবার (২৬ জুলাই) মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত অনুমোদনের জন্য আলোচ্য সূচিতে রাখা হয়েছে।

আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে বাতিল হয়ে যাওয়া পুরোনো ছয়টি আইনের কিছু বিষয় স্পষ্টকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে ‘সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তির কর্তব্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ লাভের পর কবরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধার মধ্যে থাকেন। তাই তাদের বিষয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা যুক্তিসংগত বলে মনে করেন সাবেক অনেক কর্মকর্তা।

 

 

 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি চাকরি আইনে ‘সরকারি কর্মচারী’দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘সরকারি কর্মচারী অর্থ এই আইনের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি।’ তার মতে, কোনো সরকারি কর্মচারী অবসরে চলে যাওয়ার পর আর ‘প্রজাতন্ত্রের’ কর্মে নিযুক্ত থাকেন না। তাই তাদের এই আইনের আওতায় রাখার সুযোগ নেই। তবে পালটা যুক্তি দিয়ে আরেক জন কর্মকর্তা অভিমত দেন, একজন সরকারি কর্মচারী নিজে কবরে যাওয়া পর্যন্ত পেনশনসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান। তিনি মারা গেলে তার পরিবারও অনেক সুবিধা পায়। তাই অবসরে গেলেও তাদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের একটা সুযোগ থাকা দরকার। আইনটির প্রস্তাবিত সংশোধনে ১, ৪৮ ও ৫০ ধারায় কয়েকটি করণিক ভুল সংশোধনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এ আইনটি কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে ছয়টি আইন রহিত করা হয়েছে।

 

কিন্তু এই আইনের কিছু ধারা অন্তত ১০টি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কোনো কোনো ধারাগুলো প্রযোজ্য থাকবে তা স্পষ্টকরণ করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button