লিড নিউজ

সীতাকুণ্ড

নিজেদের রাসায়নিক পণ্যেই এই ভয়ংকর বিস্ফোরণ

সীতাকুণ্ডের বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোর ভেতর একটি টিনশেডে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে; যেখানে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল। আর এই রাসায়নিক তৈরি হয়েছিল হাটহাজারী ঠাণ্ডাছড়ির আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সে, যেটি স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন। আর বিএম কনটেইনার ডিপো চট্টগ্রামভিত্তিক স্মার্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান।

আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সে তৈরি এই হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ৩০ কেজির প্লাস্টিক কনটেইনারে করে রাখা হয়েছিল বিএম কনটেইনার ডিপোর টিনশেডে।

সেখান থেকে প্লাস্টিকের কনটেইনারগুলো ২০ ফুট দীর্ঘ বড় কনটেইনারে ভর্তি করে রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়া হতো। শেডের পাশে এ ধরনের ২৬টি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারে এই দাহ্য রাসায়নিক পদার্থগুলো ছিল। রপ্তানির আগেই গতকাল শনিবার রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।

 

তবে শেডের মধ্যে কনটেইনার অসতর্কভাবে রাখা, কর্মীদের ধূমপান নাকি অন্য কোনো কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটল সেটি এখনো জানা যায়নি। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সে তৈরি রাসায়নিক থেকেই যে আগুনের সূত্রপাত, সেটি প্রথম জানা গেছে সকালে বিএম কনটেইনার ডিপোর ইয়ার্ডে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের কনটেইনার দেখে। এই কনটেইনারের গায়ে আল-রাজী লেখা আছে। এতেই নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিপজ্জনক রাসায়নিক বোঝাইয়ে নিয়ম মানা হয়েছে কি না জানতে আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানকে ফোন করলে পরিচয় জানার পর তিনি ফোন কেটে দেন।

এদিকে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা দেখেছেন কালের কণ্ঠের প্রতিবেদক রাশেদুল তুষার। তিনি ঘটনাস্থল থেকে বলেন, ‘২০ ফুট দীর্ঘ একটি কেমিক্যাল ভর্তি কনটেইনার এত প্রচণ্ড বেগে বিস্ফোরিত হয়েছে যে এত বড় কনটেইনার অন্তত ৩০০ ফুট দূরে উড়ে গিয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে পাশে থাকা আরেকটি কেমিক্যালের কনটেইনার ছিন্নভিন্ন হয়ে ছোট ছোট টুকরো আকারে ডিপোর ইয়ার্ডে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে। মনে হচ্ছে যুদ্ধ-পরবর্তী অবস্থা!’

সেই সময়ে উপস্থিত বিএম কনটেইনার ডিপোর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করেই বলেছেন, ‘বিপজ্জনক রাসায়নিক হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ভর্তি ২৬টি কনটেইনার বিএম কনটেইনার ডিপোর শেডে রাখা‌ হয়েছিল গত সপ্তাহে। সবগুলোই আমাদের স্মার্ট গ্রুপের তৈরি পণ্য। আর টিনশেডে রাখা কেমিক্যালগুলো কনটেইনারে বোঝাই করা হতো। এরপর বন্দরে নিয়ে জাহাজীকরণ করা হতো। তার আগেই বিস্ফোরণ ঘটল। ’

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘অবশ্যই অসতর্কভাবে রাখার কারণেই এই কনটেইনারে বিস্ফোরণ ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যদি পানির বদলে ফোম ব্যবহার করতেন, তাহলে এমন বিপর্যয় হতো না। ’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button