সারাদেশ

এ কেমন আচরণ শিক্ষকের!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ^রী উপজেলায় প্রতিবেশীর চলাচল বন্ধে রাস্তায় সেফটিক ট্যাঙ্ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক মাধ্যমিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক নাগেশ্বরীর কচাকাটা ইউনিয়নের ইন্দ্রগড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক মফিজুল ইসলাম। চলাচলের একমাত্র রাস্তাটিতে সেফটিক ট্যাঙ্ক নির্মাণ করে চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ায় যেন অবরুদ্ধ জীবন-যাপন করছে সেখানকার বেশ কয়েকটি পরিবার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বল্লভেরখাস ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ মাস্টার পাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলাম তার প্রদানকৃত রাস্তা দিয়ে একই গ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ যাতায়াত করে আসছিল। কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ মফিজুল ইসলাম সে রাস্তাটি বন্ধ করে সেখানে সেফটি ট্যাঙ্ক নির্মাণ করতে চাইলে বিপাকে পড়ে স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অনেকেই জানায়, চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি খোলা রাখতে স্থানীয়রা রাস্তাটিতে সেফটি ট্যাঙ্ক নির্মাণে বাধা দিলে মফিজুল ইসলাম বিভিন্নভাবে হুমকী-ধামকী দেন তাদের। তারা রাস্তাটি খোলা রাখতে স্থানীয় মহৎ প্রধান ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের শরনাপন্ন হলে মফিজুল ইসলাম স্থানীয় মহৎ প্রধান ও পুলিশ প্রশাসনের পরামর্শকে বৃধাঙ্গলী দেখিয়ে সেফটিক ট্যাঙ্ক নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়। এতে চলাচলের বিকল্প আর কোনো রাস্তা না থাকায় তাদের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম সহ মসজিদ যাতায়াত নিয়েও চরম দু:চিন্তায় পড়ে সেখানকার ১২টি পরিবার।

অভিযোগকারী হোসেন আলী, আব্দুল কাদের, আব্দুল গফুর, আলতাব আলী ও ইসহাক আলীর পক্ষ থেকে আনোয়ার হোসেন বলেন, কি আর বলি ভাই! ২০ বছর ধরে এ রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতেছি, এতদিন পর রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় আমরা বাকরুদ্ধ।

সাইফুর রহমান বলেন, এটা কি যুগ আসলো বাহে? মফিজুল নাকি স্কুলের মাস্টার, জাতির বিবেক! এই তার অবস্থা মানুষের হাটার পথ বন্ধ করি দেয়? নামায পড়তে মসজিদে যাব সে রাস্তাও রাখেনি।

অভিযুক্ত মফিজুল ইসলাম বলেন, মিলে খাইলে বনের বাঘের সাথে খাওয়া যায়। আমার ১৭ শতক চালা বাড়িতে আমরা দুই ভাই থাকি। চালা বাড়ির ভিতরে জায়গা না থাকায় আমি আমজাদ মাস্টার সহ অনেকের সাথে কথা বলে বাড়ির সাথেই সেফটি ট্যাঙ্ক দিয়েছি।

এ সম্পর্কে আমজাদ মাস্টারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সে রাস্তায় ৬ ফুট উঁচু সেফটি ট্যাঙ্ক নির্মাণ করবে এ ধরনের কথা আমার সাথে হয়নি। ওনার এ ধরনের আচরণে আমরা বাকরুদ্ধ। সে রাস্তা সমান সমান সেফটিক ট্যাঙ্কটি দিলে আমাদের চলাচলে কোনো অসুবিধা হতনা। সেফটি ট্যাঙ্ক নির্মাণের কারণে রাস্তা বন্ধ ও বৃষ্টির পানি বের হতে না পারায় আমরা এখন কয়েকটি পরিবার অবুরুদ্ধ অবস্থায় আছি।

এ ব্যাপারে বল্লভেরখাস ইউপি চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জানি। রাস্তা চলাচলে যেন কারো কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য আমি আমার স্থানীয় মহৎ প্রধানসহ বিষয়টি সুরাহার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এর সুষ্ঠ সমাধান হবে।

কচাকাটা থানা অফিসার ইনচার্জ মামুন-অর-রশীদ বলেন, যেহেতু এটা জমি-জমার বিষয়। উভয় পক্ষ বসে এটা ফয়সালা করার কথা। তবে বিষয়টি সমাধানে আইনগত কোনো কোনো সহযোগিতা চাইলে সেটা দেয়া হবে।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা নূর আহমেদ মাসুম বলেন, সেখান থেকে লিখিত বা মৌখিক এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। তবে যেহেতু সেটা জমি-জমার বিষয়, তাই খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button