রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে কলেজছাত্রীর ওড়না পেচানো মরদেহ উদ্ধার

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এক কলেজছাত্রীর গলায় ওড়না পেচানো মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই কলেজছাত্রীর নাম শিরিনা আক্তার (১৯)। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ছাটকড়াইবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিরিনা আক্তার একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। সে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
নিহত শিরিনার মা মোছা. মেহেনিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘২০১৯ সালে উজান ঝগড়ার গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান মিঠুনের সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে দুই পক্ষের সম্মতিতে শিরিনার সঙ্গে মিঠুনের বিবাহ রেজিষ্ট্রি করা হয়। এরপরে মিঠুন সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিরিনাকে সামাজিক ও ইসলামিকভাবে কলমা না পড়িয়ে অন্য এক স্থানে আবার বিবাহ করেন মিঠুন। পরে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে আমার মেয়ে বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম আদালতে মিঠুনসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে।’
স্থানীয়দের দাবি, এইচএসসি পরীক্ষার্থী শিরিনা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের রৌমারী সরকারি কলেজের দফতরি শাজাহান আলীর ছেলে নাহিদ হাসানের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে শিরিনার বাবা তাকে বকাবকি করেন। এতে রাগান্বিত হয়ে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। ঘটনার পর থেকে তার প্রেমিক নাহিদ ও পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।
অপরদিকে নিহত শিরিনার চাচা নইমউদ্দিন ওরফে বালা বলেন, ‘কয়েকদিন আগে গভীর রাতে নাহিদ হাসান আমার ভাজতির (শিরিনা) ঘরে ঢুকলে তাকে আটক করা হয়। পড়ে নাহিদের বাবা শাজাহান আলী শিরিনার সঙ্গে বিবাহ দেবেন বলে দুই দিন সময় নিলে নাহিদকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই দিন পর জানতে পারি নাহিদ ইটালুকান্দা গ্রামে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে বিবাহ সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে দাঁতভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নাহিদ শিরিনার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে জানতে পারি। পরে মেয়েটি আত্মহারা হয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। আমি, মিঠুন ও নাহিদের বিচার চাই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ’শিরিনা নামের এক কলেজছাত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে রৌমারী থানায় নেয়। তবে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা আমার জানা নেই।’
রৌমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. একরামুল হক বলেন, ’প্রাথমিকভাবে নিহত শিরিনা আক্তারের মরদেহ দেখে মনে হয়েছে আত্মহত্যা হতে পারে।’
এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ্ বলেন, ’এইচএসসি পরীক্ষার্থী শিরিনার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানোর প্রস্ততি চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button