বরিশাল বিভাগসারাদেশ

কৃষকের মুখে সূর্যমুখীর হাসি

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: উপকূলীয় অঞ্চল পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিস্তৃর্ন মাঠ জুড়ে এখন সূর্যমুখীর হাসি। লাভজনক হওয়ায় দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে এ ফুল চাষের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে এবছর। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। এছাড়া সূর্যমুখীর তেল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত। অন্য সব তেলের তুলনায় সূর্যমুখীর তেলে পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। তাই বাজারে এর চাহিদাও বেশি। তবে সহজ বাজারজাতকরণ, কৃষি বিভাগের পরামর্শ, সেচ এবং ঋণ সুবিধা পেলে সূর্যমুখী ফুল চাষের মাধ্যমে এ অঞ্চলের কৃষিতে ব্যাপক বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় মোট ৪৪০ হেক্টর জমিতে সূর্ষমুখীর চাষ করেছে কৃষকরা। এর মধ্যে হাইসান ৩৩ জাতের ৪০০ হেক্টর, আর ডি এস ২৭৫ জাতের ২০ হেক্টর, হাইব্রিড বাড়ি ২ ও ৩ জাতের ২০ হেক্টর জমিতে সূর্ষমুখীর চাষ করা হয়েছে। ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরন করার লক্ষে ব্যপক আকারে সূর্যমূখীর আবদ করা হয়েছে। এ উপজেলার টিয়াখালী, ধানখালী, চম্পাপুর, নীলগঞ্জসহ ১২ টি ইউনিয়নেই কমবেশি সূর্ষমুখীর চাষ করেছে কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, অনেকে শখের বসে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করতো। এখন এর বীজ থেকে উন্নতমানের তেল উৎপাদন করা সম্ভব বিধায় কৃষকরা এর চাষে আগ্রহী হয়েছে। এবছর ভালো দাম পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এর চাষ করবে কৃষকরা। তাছাড়া সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী কৃষকদের কৃষি বিভাগ সকল ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলার পশ্চিম টিয়াখালী গ্রামের সূর্যমুখী চাষী জেসমিন আক্তার বলেন, এর আগে কখনোই সূর্যমূখীর চাষ করিনি। কৃষি অফিসের সহযোগীতায় এই গ্রামের ১৩ জন কৃষক ৩০ বিঘা জমিতে এই ফুলের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনের আশা করছি। কৃষি অফিস থেকে বীজ সারসহ বিভিন্ন রোগ ও পোকা দমনে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করেছে। আমাকে দেখে এলাকার অনেক নারী সূর্যমূখী চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। অপর এক চাষি বেল্লাল মুন্সি জানান, এবছর ৩০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন তিনি। খরচ হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা। ফলনও ভাল হয়েছে। এটি খুবই লাভজনক ফসল। সূর্যমুখী চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোজ্য তেলের দাম বেশি হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে মানুষের ঝোঁক বেড়েেেছ। ফলন ভালো হলে আগামীতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষ করবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্য সম্মত। কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় এই সূর্যমুখী চাষ করেছেন কৃষকরা।
তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের পরিচালক কৃষিবিদ মো.জসিম উদ্দিন বলেন, দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরন এবং অমদানি নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধিনে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের আওতায় পাঁচ বছর মেয়াদী তেল জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প দেশের ২৫০ উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো তেল জাতীয় বীচ আবাদ ও উৎপাদন করা।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button