রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

চট্টগ্রাম থেকে মোটরসাইকেলে পাঁচশ কি:মি: পাড়ি দিয়েও মেয়েকে স্কুলে পৌঁছাতে পারলেন না মজনু

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম থেকে মোটরসাইকেলে দীর্ঘ প্রায় পাঁচশ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েও শেষ পর্যন্ত মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে পারলেন না মো: মজনু (৩৫) নামে এক হতভাগা পিতা। গন্তব্যের মাত্র ৩০ কিলোমিটার আগে দ্রুতগামী ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তার। তাদের সাথে থাকা মো: ভুট্টু (৪০) নামে অপর একজনও নিহত হন। আর গুরুতর আহত হয় মজনুর একমাত্র মেয়ে জাকিয়া সুলতানা (৭)। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। দূর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যায় তাদের ব্যবহৃত টিভিএস আরটিআর ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল।
নিহত মজনু নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রনাইল গ্রামের মৃত ইসলাম আলীর ছেলে ও ভুট্টু নিয়ামতপুর উপজেলার তালপাকুড়িয়া গ্রামের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে।
নিহতের স্বজনেরা জানান, মজনু ও ভুট্টু স্বপরিবারে চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্সে কাজ করতেন। মজনুর মেয়ে তার নানিবাড়ী নিয়ামতপুরে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। ক’দিন পরে তার স্কুল খুলবে বলে মেয়েকে নানিবাড়ী পৌঁছে দিতে মজনু তার সহকর্মী ভুট্টুসহ মেয়েকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে নিয়ামতপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দীর্ঘ প্রায় পাঁচশ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসে শুক্রবার দিবাগত রাত ১১ টায় তারা নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের নওহাটা মোড় এসিআই ওয়েল মিলের কাছে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাক তাদেরকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
নওহাটা পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই ফরিদ উদ্দিন জানান, ফাঁড়ি পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার ও আহত শিশুকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, দূর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই তিনি ও এসআই জাহাঙ্গীর দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। চট্টগ্রামে স্বজনদের কাছে খবর পৌঁছানো হয়েছে। তারা মহাদেবপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, দূর্ঘটনাস্থল থেকে নিয়ামতপুরের দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button