রংপুর বিভাগসারাদেশ

জলঢাকায় অনিশ্চিতায় জোড়া লাগা শিশুদের ভবিষ্যৎ

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ লাবিবা দাঁড়াতে চাইলে লামিসা চায় বসতে কিংবা যখন লামিসা ঘুমাতে চায় তখন লাবিবা শুরু করে কান্না। এতে করে ঘুম ভেঙ্গে যায় তার। এভাবেই দিন কাটছে নীলফামারীর জলঢাকায় জন্ম নেওয়া জোড়া লাগা দুটি শিশু কন্যার। আর তাদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা ও চরম বিপাকে পড়েছেন তাদের মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজন। কি হবে শিশুদুটির ভবিষ্যৎ এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। জন্ম নেওয়ার দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের শরীরে অস্ত্র পচার না হওয়ায় জোড়া লাগা রয়ে গেছে। অর্থের অভাবে উন্নত চিসিৎসা করাতে পারছেন না শিশু দুটির পিতা রাজমিস্ত্রি লাল মিয়া।
গত বছরের ১৫এপ্রিল নীলফামারীর জলঢাকায় কৈমারী ইউনিয়নের যদুনাথপাড়ার আমিন আলীর ছেলে লাল মিয়া দম্পত্তির ঘরে জন্মগ্রহন করে জোড়া লাগানো ওই জমজ শিশু। স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথিবীতে আগমন হয় নবজাতকের এবং নাম রাখা হয় তাদের লাবিবা ও লামিসা। জন্ম থেকেই শিশু দুটির কোমরে রয়েছে জোড়া লাগা। বেড়ে ওঠার সাথে তাদের বাড়ছে নানান চাহিদা, একজনের সাথে অপর জনের মিলছে না কোন কিছুতেই। সন্তানদের সামলাতে গিয়ে তাদের মা হয়ে পড়েন অসুস্থ। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করলেও বাচ্চা সামলাতে সময় ব্যয় করতে হয়। যার ফলে যেতে পারে না কাজে। জোড়া শিশুদের মা মনুফা বেগম বলেন চার হাত, পা, মাথা আলাদা থাকলেও, সম্পর্ক রয়ে গেছে দেহের সাথে। জন্মের পরেই তাদের মলদার না থাকায় পেটের মধ্যে পৃথক ভাবে গড়ে দেয়া হয় মলদ্বার।
লাবিবা ও লামিসার বাবা লালমিয়া জানান, আমি ঢাকায় ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছেন সঠিকভাবে অস্ত্রপচার করতে পারলে শিশুদুটিকে আলাদা করা যাবে। সেই জন্য প্রয়োজন অনেক টাকা যা আমাদের কাছে নেই। লাবিবা লামিসার চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, শিশু দুটির যতটুকু জেনেছি সেই ধারণা থেকে বলা যায় উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের আলাদা করা যাবে। তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি একটু উন্নতি হলে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমি সবে মাত্র জেনেছি। তাদের উন্নত চিকিৎসা যাতে হয় সে ব্যবস্থা আমি নেব।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button