সারাদেশ

বগুড়ার ধুনটে খাবার না পেয়ে পেটের ক্ষুধায় বৃদ্ধের আত্মহত্যা

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার ধুনটে খাবার না পেয়ে মন্তাজ আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছে। শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের গজিয়াবাড়ী গ্রামে তিনি নিজ শয়ন ঘরের তীরের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, কাজিপুর উপজেলার বাসিন্দা মন্তাজ আলী প্রায় ৩০ বছর পূর্বে ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের ফযগভা বিশার দিয়ার গজিয়াবাড়ী গ্রামে ১২ শতাংশ জমি ক্রয় করে স্ত্রী ও ৩ মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছিলো। তিনি পেশায় দিনমজুর হিসাবে অন্যের বাড়িতে বিভিন্ন কাজ কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করতো। তার ৩ মেয়েকে বিয়ে দেওযার তারা সবাই ঢাকা পোশাক কারখানায় কাজ করে। প্রায় দেড় বছর পূর্বে তার স্ত্রী রহিমা খাতুন পক্ষঘাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ঘরে পড়ে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে সারা বিশ্ব আক্রান্ত ও বাংলাদেশে এ ঘাতক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সাধারন মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। সংক্রামক ঠেকাতে সাধারন মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে প্রশাসন বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করার ফলে মন্তাজ আলীর মতো দিন আনা দিন খাওয়া বৃদ্ধরা পড়েছে তীব্র খাবার সংকটে। মন্তাজ আলীর প্রতিবেশী শামছুল হক , আফছার আলী সহ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২/৩ জন নারী জানান, মান্তাজ আলীর ঘরে থাকা অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা তো দুরের কথা গত ৩/৪ ধরে ঘরে কোন খাবার না ছিল না। প্রতিবেশীদের ধারনা মন্তাজ আলী ক্ষুধার জ্বালায় নিবারন করতে না পারায় শনিবার সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে নিজ ঘরের তীরের সাথে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পক্ষঘাত রোগে আক্রান্ত মন্তাজ ্অলীর স্ত্রী রহিমা খাতুনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কোন কথা বলতে পারেন নি। বৃদ্ধা মন্তাজ আলী নামে বয়স্ক ভাতা কিংবা সরকারী কোন ত্রান সামগ্রী পেয়েছিল কিনা জানতে চাইলে গোপালনগর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, মন্তাজ আলীর কোন দিন সরকারী ত্রান সামগ্রী নিতে আসেনি এবং দিতে চাইলেও নেননি ।

এদিকে কয়েকদিন উপোস থেকে বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। এবিষয়ে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধ বালা বলেন, খাবাবের অভাবে নয় কিছুদিন আগে বৃদ্ধ মন্তাজ আলী বড় মেয়ে রত্না খাতুন ৬ শতাংশ জমি লিখে নেওয়ার কারনে মন্তাজ আত্মহত্যা করেছে। গোপাল নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন সরকার বলেন, কয়েকদিন আগে ওয়ার্ড সদস্য গোলাম মোস্তফার মাধ্যমে ওই বৃদ্ধকে ত্রান দিতে বলেছিলাম তিনি ত্রান নেন নি শুনেছি তার অসুস্থ স্ত্রীর ৬ শতাংশ তার এক মেয়ে চালাকী করে লিখে নেওয়ার শোকে মন্তাজ আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া সুলতানা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে দুই দফা ত্রান বিতরন করা হয়েছে। খাবার না পেয়ে কোন মানুষ মারা যাওয়ার কথা নয়। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button