রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

বাবা রিকশা চালায় জেনেই তালাক, শত বাধা পেরিয়ে মেডিক্যালে ভর্তির অপেক্ষায়

খবরটি শোনার পরই কেঁদে ফেলেন রিকশাচালক বাবা গোলাম মোস্তফা। মেয়ে সুমি মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। সংসারের অভাব-অনটনের কারণে তাঁকে বাল্যবিবাহ দেন। কিন্তু বাবা রিকশা চালান—এ খবর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছানোর পর মাত্র তিন মাসের মাথায় ভেঙে যায় সে সংসার।

সেই থেকে গোলাম মোস্তফার প্রতিজ্ঞা ছিল, শত কষ্ট হলেও মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করবেন। সেই আশা পূরণ হয়েছে। তবে রিকশা চালিয়ে মেয়ের পড়ার খরচের ব্যাপারে শেষ রক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর।

অদম্য মেধাবী শারমিন আক্তার সুমি জয়পুরহাট সদর উপজেলার নিভৃতপল্লী কয়তাহার গ্রামের হতদরিদ্র গোলাম মোস্তফার মেয়ে। মা তাহমিনা বেগম গৃহিণী। দুই মেয়ের মধ্যে সুমি ছোট। এবারের মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় ৭৭.০৫ স্কোর নিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

সুমির বাবা গোলাম মোস্তফা জানান, বড় স্বপ্ন নিয়ে সুমিকে বিয়ে দিয়েছিলেন বড় ঘরে। কিন্তু রিকশাচালকের মেয়ে হওয়ায় তাঁকে গ্রহণ করেনি ছেলেপক্ষ। বিয়ের তিন মাস পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর তালাক দেন তাঁরা। সেদিন আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে কেঁদেছিলেন গোলাম মোস্তফা। বিয়ের মেহেদি মুছতে না মুছতে তালাকপত্র পেয়ে কেঁদেছিলেন মেয়ে সুমিও। তখন থেকেই ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নেন সুমি।

গত শনিবার সকালে জয়পুরহাট সদর উপজেলার কয়তাহার গ্রামে খোঁজ নিতে গিয়ে কথা হয় সুমির বাবা গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিজের জমিজমা নেই। ওর পড়ালিখা ছাড়াও সংসারের খরচ জোগানোর জন্য আমি রিকশা চালাই সিলেট শহরে। ’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button