মাটি বাঁশের তৈরী খেলনা বিক্রয় করে স্বাবলম্বী উমা কান্ত।
ফুলবাড়ী(দিনাজপুর)থেকে : অভাবের তাড়নায় এক সময় অল্প বয়সে পরিবারের হাল ধরতে হয় পার্বতীপুর ফকিরা বাজারের উমা কান্তকে। ৩ ভাই ২ বোনের মধ্যে উমা কান্তই সবার বড় । এতো গুলো মানুষের খাবার যোগাতে বাবাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবে অভাব অনটনের সংসারে বাবাকে অর্থ যোগান ও সংসারের স্বচ্ছলতা এনে দিতে ১৬ বছর বয়সেই দিতে হয় সংসার জীবনে পাড়ি। বাবা কৃষক হওয়ায় প্রথমে তিনি কৃষি কাজে যোগদেন। সেখানে কোন সফলতার মুখ দেখতে না পেয়ে তিনি নিজেই মাটির ঢোলগাড়ি(টমটম) তৈরী করে বাজারে বিক্রয় করতে শুরু করেন। সেখানে বেশ লাভ হওয়ায় ধীরে ধীরে মাটি ও বাঁশের সংমিশ্রনে বেহালা তৈরীর সিন্ধান্ত নেন। বেহালা তৈরীতে যে পরিমান খরচ হয় তার চেয়ে তিন গুন বেশী লাভ হওয়ায় তার ১৬ বছর বয়সে ধরা ব্যবসা আজ ৫৫ বছর বয়েসেও বেশ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুলে পড়ছেন। এই ব্যবসা ধরার পর থেকে সংসারের সবধরনের অভাব মিটে গেছে পাশাপাশি ছেলে মেয়েকে পড়াশোনার খরচ দিতে পারছেন স্বাছন্দে ।
উমা কান্ত পার্বতীপুর হরিরামপুর ইউনিয়ানের উৎপল কান্তর ছেলে। মা বাবা মারা যাবার পর এখন সে তার নিজের সংসার নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন।
উমা কান্ত জানান, বর্তমানে আমি আর মাটির বাটি তৈরী করি না। এখন সেগুলো বিভিন্ন কুমার পাড়াতে পাইকাড়ি বিক্রয় হয় সেখান থেকে একশ বাটি দুইশত টাকা দর দিয়ে কিনে এনে বাঁশের বাতা দিয়ে নিজেই ফ্রেম করে ঢোলগাড়ি(টমটম) ও বেহালা তৈরী করি। বতর্মানে একটা বেহালা তৈরীতে আমার খরচ ৪ থেকে ৫টাকা পড়ে বাজারে সেটা ২০টাকা হিসেবে বিক্রয় করি। প্রতিদিন ১ হাজার টাকার মাল নিয়ে জেলার উপজেলা গুলোতে বিক্রয় করে দিন গেলে ৮ শত টাকা লাভ হয়। তাই দিয়ে আমার ছেলে মেয়ে পড়াশোনার খরচ মিটানো হয়। বর্তমানে আমার আর কোন অভাব নাই।