রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

শেরপুরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ^শুর নিহত

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে যৌতুকলোভী জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ^শুর আসাদুল ইসলাম (৪৬) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (০৯জুলাই) নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত আসাদুল ইসলাম উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভবানীপুর আমতলা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে। এরআগে বৃহস্পতিবার (০৮জুলাই) দিনগত রাত দশটার দিকে বখাটে জামাইয়ের যৌতুকের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
পরে তাঁর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে দ্রুত উদ্ধার করে আসাদুল ইসলামকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভবানীপুর গ্রামের শাহিন আকন্দের ছেলে সাব্বির হাসান নামের এক বখাটে যুবক আসাদুল ইসলামের মেয়ে শিলু আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এমনকি বিগত দশ থেকে বারো মাস আগে ওই সম্পর্কের সূত্রধরে তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন সাব্বির। তবে তাদের উভয় পরিবারই এই বিয়ে মেনে নিতে অসম্মতি জানান। একপর্যায়ে সাব্বিরের পরিবার মেনে নিলেও আসাদুল ইসলাম মেয়ে-জামাইকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সমঝোতা বৈঠকও করা হয়। এরপর বিগত চার থেকে পাঁচ মাস আগে জামাই মেয়েকে মেনে নেন আসাদুল ইসলাম। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই জামাই সাব্বির শ্বশুরের কাছে যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে বসেন। এরমধ্যে তিন লাখ দিতেও চাওয়া হয়। এরপরও দাবিকৃত বাকি টাকা নিয়ে আবারও জামাই ও শ্বশুরের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটার দিকে স্থানীয় পারভবানীপুর আমতলা বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন আসাদুল ইসলাম। একপর্যায়ে বাড়ির কাছাকাছি তিনমাথা নামক স্থানে পৌছামাত্র দাবিকৃত যৌতুকের টাকা নিয়ে জামাই-শ্বশুরের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এসময় জামাই সাব্বির শ্বশুর আসাদুলের বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। পাশাপাশি নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির বুকে ছুরিকাঘাতের চিহৃ রয়েছে। এছাড়া ঘটনার পরপরই জামাই সাব্বির পালিয়ে যাওয়ায় তাকে ধরা সম্ভব হয়নি। তবে তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উক্ত ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button