সরকারি অর্থায়নে নির্মিত ‘বধ্যভুমির শহর’ নাটকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি!
সরকারী অর্থায়নে নির্মিত ‘বধ্যভুমির শহর’ নাটকে সৈয়দপুর শহরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও শহীদ পরিবারের সন্তানরা। মঙ্গলবার সকালে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
সৈয়দপুর পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও প্রজন্ম ৭১’র সাধারন সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, প্রজন্ম ৭১’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোনায়েমুল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলী, শহীদ পরিবারের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন বেগ, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাঈদ রেজা, সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল হক, কাজী রাশেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নাটকে সৈয়দপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। নাটকের চরিত্রে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী শহীদদের প্রাধান্য দেয়া হয়নি। কুখ্যাত রাজাকার নঈম গুন্ডাসহ চিহ্নিত অবাঙ্গালী রাজাকারের চরিত্র নাটকের মধ্যে ছিল না। ফলে নাটক মঞ্চায়ন শেষে শহীদ পরিবারের সন্তান ও আওয়ামীলীগ নেতারা এ নিয়ে প্রতিবাদ করেন।
বক্তারা বলেন, সৈয়দপুরের ইতিহাস বিকৃত করার এ কাজে দৈনিক প্রথম আলোর সৈয়দপুর প্রতিনিধি এম আর আলম ঝন্টু প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করেছেন। ওই সাংবাদিকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাটকটির রচনা সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবাশীষ ঘোষ। তাই সৈয়দপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মূলহোতা এ সাংবাদিক।
মানববন্ধনে বক্তারা নাটকটির কাহিনী ও চিত্রনাট্য সংশোধন করে পূর্নরায় মঞ্চায়নের দাবি জানান। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টুকে সৈয়দপুরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। বক্তারা প্রথম আলো পত্রিকাটি না পড়ার জন্য সৈয়দপুরবাসীকে অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য যে, গত ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট বধ্যভূমিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটারের পরিবেশনায় মঞ্চায়িত হয় ‘বধ্যভূমির শহর’ নাটকটি। সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী, নাট্য ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এমপি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী, জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন, পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবীসহ প্রায় পাঁচ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন দেবাশীষ ঘোষ। এতে স্থানীয় বিভিন্ন নাট্য সংগঠনের অভিনেতা ও ছাত্রছাত্রীরা অভিনয় করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন পাক্ষিক আনন্দ আলোর পত্রিকার সম্পাদক রেজানুর রহমান।