জাতীয়

আইসিটি খাতের আয় হাজার কোটি ডলারে যাবে চার বছরে

বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে আইসিটিখাত থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিবছর ফ্রিল্যান্সাররা ৪০০ মিলিয়ন ডলার অফিশিয়ালি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আয় করছেন। তবে আন-অফিশিয়ালি তাঁরা বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে এক বিলিয়ন ডলার আয় করছেন। তাই আমি মনে করি, ২০৪১ সাল নয়, ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে এই আইসিটি তথা ফ্রিল্যান্সিং খাত থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারব আমরা।

গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং ইন বাংলাদেশ : প্রেজেন্ট স্ট্যাটাস, চ্যালেঞ্জিং অ্যান্ড অপরচুনিটি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) সেমিনারের আয়োজন করে।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সব সমস্যা সমাধান করেছি। এখন সমস্যার কথা কেউ বলছে না। এই সেক্টরের যাত্রা শুরুর দিকে টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে আনা যেত না। বিদেশি আত্মীয়ের কাছ থেকে নিতে হতো। টাকা অফিশিয়ালি আসত না। আমরা ফ্রিল্যান্সারবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছি। যদিও এখনো অনেক টাকা অফিশিয়ালভাবে আসছে না। যেহেতু সরকার পরিবেশ তৈরি করেছে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। তবু এখন তাঁরা কিছুটা হলেও সুফল পাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, সরকারের কাজ ব্যবসা করা না, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা আর আমরা সেই কাজটিই করছি। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, গার্মেন্ট খাতের পর ফ্রিল্যান্সিং খাত হবে দেশের রপ্তানি আয়ের বৃহৎ খাত। ’

এ সময় তিনি বলেন, ‘সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে বলা হয়েছিল বেকারত্বের কথা। কিন্তু আমি মনে করি, বাংলাদেশে কোনো বেকারত্ব নেই। আজ গার্মেন্টে অনেক বেশি অর্ডার আসছে। গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, তারা এখন শ্রমিক পাচ্ছে না। আমার কাছে বিজিএমইএর নেতারা বলেছেন, জর্দানে পোশাক কারখানায় আমাদের শ্রমিকগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আপনি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলেন, এটা বন্ধ করতে। কারণ আমরা পোশাক কারখানায় শ্রমিক পাচ্ছি না। ’

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি সেন্টার হবে। এখানে ফ্রিল্যান্সারদের আলাদা স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতিটা স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব দিচ্ছি। তৃণমূল থেকে আইসিটি শিক্ষা এগিয়ে নিচ্ছি। আমরা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটা পৃথক পলিসি বা গাইডলাইন দরকার। পলিসি সাপোর্ট থাকলে ফ্রিল্যান্সাররা আরো এগিয়ে যাবেন। তাঁদের জন্য একটা কোর্সেরও ব্যবস্থা করেছি। ’

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘আমি এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের ১৫ দিনের মাথায় নির্দেশনা আসে ফ্রিল্যান্সারদের সনদ দেওয়ার জন্য। আমরা সেই কাজটা এখন এগিয়ে নিচ্ছি। এখন চাইলে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে সনদের জন্য আবেদন করা যায়। অনেকে এখানে আবেদন করছেন এবং সনদ পাচ্ছেন। আমাদের শিক্ষিত বেকার আছে, আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠী আছে। এই শক্তি কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা তৈরি হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সারের ৭০ শতাংশ তরুণ। বৈশ্বিক আকার দিন দিন বাড়ছে। আমাদের তরুণরা এটায় ভাগ বসাতে চায়। গ্লোবাল মার্কেটে আমাদের পদচারণ বাড়াতে পারি। আমরা সেকেন্ড লার্জেস্ট ফ্রিল্যান্সার সাপ্লায়ার। ’ তিনি আরো বলেন, ‘খুব শিগগিরই ৭০ জন ফ্রিল্যান্সার আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য চমৎকার একটা পাওয়া। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের বস নিজেই হতে হবে। ’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button