জাতীয়

আর কত দাম বাড়বে ভোজ্য তেলের

দফায় দফায় দাম বেড়ে ভোজ্য তেলের মূল্য অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৫৩ টাকায় ঠেকেছে। আর বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিনের দাম হয়েছে ৭২৮ টাকা। দেশের বাজারে এর আগে কখনও এত দাম বাড়েনি সয়াবিন তেলের। রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে নতুন এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
অবশ্য সয়াবিন তেলের দামে গত জুন মাসে লিটারপ্রতি ৪ টাকা ছাড় দিয়েছিল বিপণনকারী কোম্পানিগুলো। সেই ছাড় গতকাল তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য সয়াবিনের ১ লিটারের বোতলের দাম হবে ১৫৩ টাকা। যদিও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে ভোজ্য তেলের মূল্য আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সেটি নাকচ করে দিয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সাধারণ মানুষকে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল ৭২৮ ও ১ লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৯ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। আর পাম অয়েল তেলের প্রতিলিটারের দাম হবে ১১৬ টাকা।
ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত ৩০ জুন সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা কমানোর কথা জানিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহা, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে সয়াবিন, পাম ও অন্যান্য ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত ২৭ মে সয়াবিন তেলের দাম একলাফে ৯ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।
তাতে বোতলজাত ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪৪ থেকে বেড়ে লিটারপ্রতি ১৫৩ টাকা হয়। এবার আবার দর ১৫৩ টাকায় ফিরল। দেশে গত এক দশকের মধ্যে ভোজ্য তেলের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২০১২ সালের মাঝামাঝি। ওই বছর বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারপ্রতি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দেশের সয়াবিনের উৎস ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে সয়াবিনের দাম বাড়ছেই। তারা গত মাসেই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, দাম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেলের কাঁচামালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তা সত্ত্বেও কোরবানির ঈদ, শোকাবহ আগস্টসহ করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এতদিন দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়নি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামান বলেন, বর্তমান বিশ্ববাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের কাঁচামালের দাম এখন প্রতি টন ১২০০ ডলারের ওপরে। তবুও আমরা ভোক্তাদের কথা বিবেচনায় দাম আগের মতোই রেখেছি। এতে হয়তো ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য প্রফিট মার্জিন থাকবে না। তবুও ব্যবসা করতে হলে মাঝেমধ্যে একটু ছাড় দিতে হয়।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এই সপ্তাহের মধ্যে চিনির মূল্য নির্ধারণ নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। চিনির বর্তমান খুচরামূল্য আরেকটু কমবে বলে আশা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button