জাতীয়
করোনায় টিকা গ্রহণকারীদের মৃত্যুঝুঁকি কম
করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পরও যে কেউ সংক্রমিত হতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তাদের ঝুঁকি টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় কম। পাশাপাশি যারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত; কিন্তু টিকা নেননি তাদের ৩২ শতাংশই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে যেতে হয়েছে। টিকা গ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে এ হার ছিল ১০ শতাংশ। এ ছাড়া একাধিক অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত টিকা নেওয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণ দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি ছিল বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আইইডিসিআর। সংস্থাটির গবেষণা অনুযায়ী, টিকা নেওয়া করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৭ শতাংশ, আর না নেওয়াদের ২৩ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
গত মে ও জুন মাসে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করে আইইডিসিআর। রোববার রাতে ওই গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়। গবেষণার ফলের ভিত্তিতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সবাইকে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। গবেষণায় গত মে ও জুন মাসে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জাতীয় তালিকা থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ১ হাজার ৩৩৪ জনকে নির্বাচন করা হয়। তাদের সবার বয়স ছিল ৩০ বছরের বেশি। এই ১ হাজার ৩৩৪ জনের মধ্যে ৫৯২ জন কোনো টিকা নেননি। টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন এমন ৩০৬ জন টিকা নেওয়ার অন্তত ১৪ দিন পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গবেষণায় আইইডিসিআর দেখতে পায়, টিকা না নেওয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শ^াস-প্রশ^াসজনিত জটিলতায় ভুগছেন ১১ শতাংশ, যা পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৪ শতাংশ ছিল। আর অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত টিকা না নেওয়া করোনা পজিটিভ রোগীদের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিলতার হার দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারী করোনা পজিটিভ রোগীদের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। টিকা গ্রহণকারীরা করোনাভাইরাসের সংক্রমিত হলে তাদের আইসিইউও কম লেগেছে এবং মৃত্যুর হারও কম।
আইইডিসিআর বলছে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী টিকা না নেওয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৯ জনকে আইসিইউতে নিতে হয়েছে যা গবেষণায় পাওয়া ফল ৩ শতাংশ। পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনজনকে আইসিইউতে নিতে হয়েছে, যা ১ শতাংশের কম। করোনাভাইরাসের টিকা নেননি এমন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, শতকরা হিসেবে যা ৩ শতাংশ। অন্যদিকে টিকা নেওয়াদেরও একজন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন। আইইডিসিআরের এ গবেষণায় করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির পাশাপাশি রোগের গতিবিধিও পর্যালোচনা করা হয়েছে।