জাতীয় পার্টির টানাপোড়েন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এখানে আওয়ামী লীগের কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি বর্তমানে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল। এরশাদ-উত্তর জাতীয় পার্টিতে যে টানাপোড়েন চলছে, এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। এটা একান্তই জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তারাই সমাধান করবে। কে তাদের চেয়ারম্যান হবে? কে তাদের বিরোধীদলীয় নেতা হবে- এটা তারাই ঠিক করবে। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে যুবলীগ দক্ষিণের মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিরোধী দলের আসনে যারা বসবে, স্পিকার নিয়মমতোই তাদের স্বীকৃতি দেবেন। এখানে কারও প্রতিই শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের কোনো পক্ষপাত নেই।
‘সরকার যাকে চাচ্ছে সেই বিরোধীদলীয় নেতা হবে’- বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিরোধী দলের নেতা নিয়মানুযায়ী যিনি হবেন, স্পিকার তাকেই নির্বাচিত করবেন। এখানেও আমাদের পার্টির কোনো কিছু বলার নেই। আমরা অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। কোনো প্রকার হস্তক্ষেপের প্রশ্নই ওঠে না।
রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রংপুর-৩ আসনে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি চলছে। আমাদের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। এ পর্যন্ত ১৬ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। শনিবার (আজ) প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হবে। তবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো প্রার্থিতা নেই। আমরা দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্য থেকেই নৌকার মনোনয়ন দেব।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যতই চেঁচামেচি করুক, বিষোদ্গার করুক, এটাই বাস্তব- উন্নয়ন অর্জনে শেখ হাসিনা আজ অপ্রতিরোধ্য। বর্তমান বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি বিরোধী রাজনীতিকদের সংকটে ফেলে দিয়েছে। বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি করে।
তাই তাদের এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় নেই। এ সংকটের কারণে বিএনপি আজ পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জনগণের প্রতি আস্থা হারিয়ে বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। নালিশ করছে। দেশের বদনাম করছে। চরম দেউলিয়াপনা ও বেহায়াপনা করছে বিএনপি নামক দলটি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যারা রাজনীতিবিদ তারা সবসময় চিন্তা করি আগামী নির্বাচন নিয়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একজন সফল রাষ্ট্র পরিচালক, যিনি আগামী প্রজন্মের কী হবে সেটা নিয়ে ভাবেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন। কর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার যে মমতা এবং ভালোবাসা তা অতুলনীয়। আমি অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমার জন্য শেখ হাসিনা যা করেছেন তা আমার মায়ের থেকে কোনো অংশেই কম নয়। তিনি তার কর্মীদের মমতাময়ী মায়ের মতো ভালোবাসেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আজ শেখ হাসিনা নিজেকেও অতিক্রম করেছেন। তার মেধা, সততা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি আওয়ামী লীগকেও অতিক্রম করে গেছেন। দেশের মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী তার যে গ্রহণযোগ্যতা তার ধারেকাছেও আমাদের কেউ নেই। বাংলাদেশে এখন যে ম্যাজিকেল উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে, এই ম্যাজিকেল উন্নয়নের পেছনে রয়েছে শেখ হাসিনার ম্যাজিকেল লিডারশিপ।
এর আগে সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনকে ‘জনগণের ক্ষমতায়ন দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী।
যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। এ সময় যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।