জাতীয়

নালার পানিতে নাকাল সৈয়দপুরের সাদরা লেনবাসী

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: শ্রাবণের বারি ধারায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাঁশবাড়ি এলাকার সাদরা লেনের শতাধিক পরিবার জলাবদ্ধতায় নাকাল হয়ে পড়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুধু জলাবদ্ধতা নয়, জলাবদ্ধতার সঙ্গে ময়লা উঠে আসছে ঘরের ভেতরে । প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
দীর্ঘ দিনেও জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধান না হওয়ায় তাদের এ দুর্ভোগ। তবে রেলওয়ের জায়গা দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ এবং পানি বের করে দেয়ার জন্য ড্রেন নির্মাণে স্থানীয়রা জায়গা ছেড়ে না দেয়ায় ওই অবস্থার সৃষ্টি বলে দাবি পৌর কর্তৃপক্ষের।
সোমবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, এলাকায় ড্রেনেজ সমস্যা প্রকট। পানি নিষ্কাশনের জন্য নেই কোন ড্রেন। এছাড়া আউটলেট না থাকায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কোন কোন এলাকায় কাদা-পানি মিলে একাকার হয়ে সারা বছর রাস্তা চলাচল অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি এবং মহল্লার বাসিন্দাদের পানি বের হবার কোন পথই খোলা নেই। শহীদ নুর মোহাম্মদ সড়কের বাসিন্দা কাইয়ুম বলেন, ঘরের আঙ্গিনায় এসেছে নোংরা পানি। গন্ধে টেকা দায়। আমার বাড়ির পাশের নালার পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ। ওখানে ঝোপ – ঝাড় আর ময়লার ভাগার। এ ময়লা আশে পাশের উঠান-বারন্দায় উঠছে। পঞ্চাশোর্ধ মো. রাশেদ বলেন, সারাটি জীবন এভাবে জলাবদ্ধতার মধ্যেই কাটাতে হলো। সৈয়দপুর পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন- নিবেদন করে ও কোন ফল পাওয়া যায়নি। মনে হচ্ছে এ জীবনে আর ড্রেনের দেখা পাবনা।
এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বেগম বলেন, নোংরা পানি, দুর্গন্ধ, মশার যন্ত্রনা তো আছেই। বাড়ির উঠোনে লাগানো একটি গাছও বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। এলাকায় চর্ম ও পানিবাহিত রোগে ভুগছেন অনেকেই। সাদরা লেন সংলগ্ন বায়তুস সালাম রোডের বাসিন্দা কাওছার জানালেন, বৃষ্টি ছাড়াই জলাবদ্ধতা লেগে আছে। সামন্য বৃষ্টিতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়। পরিবারগুলো হয়ে পড়ে পানিবন্দি।
একই এলাকার শিক্ষার্থী অলক সরকার বলেন, মধ্য শহরের বাসিন্দা আমরা কিন্তু এলাকাটিকে মনে হয় বস্তির মত। পায়ের স্যান্ডেল হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয় আমাদের।
সবচেয়ে বেকায়দায় পড়তে এলাকার মুসল্লিদের। ময়লা ও দুর্ঘন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে সমজিদে যেতে পারেন না। ফলে বিঘিœত হতে তাদের এবাদত- বন্দেগী। ওই এলাকার অবসর প্রাপ্ত বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক হায়াৎ আলী জাফরী বলেন, আর ক’দিন পরেই পবিত্র ইদুল আযহা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ ধর্মীয় উৎসবেও জলাবদ্ধতার কারনে আমাদের ঘর বন্দি হয়ে থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর পৌর পরিষদের প্যানেল মেয়র মো. জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ওই এলাকায় ড্রেন নির্মানের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর আগে ড্রেন নির্মানের উদ্যোগ নিলে স্থানীয় লোকজন জায়গা না ছাড়ায় তা সম্ভব হয়েনি।
সংলগ্ন রেলওয়ে ব্যাকবোন ড্রেনের জায়গা দখল করে বাড়ি ঘর নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button