চাহাল ধোনির কেঁদে কেঁদে মাঠ ছাড়ার সেই ঘটনা নিয়ে যা বললেন
স্পোর্টস ডেস্ক :
গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আউট হয়ে ফেরার পথে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কান্নার সেই মুহূর্তটি আবার আলোচনায় চলে এসেছে।
সেই সময় ধোনির সেই কান্নার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তা দেখে আপ্লুত হয় ভারতবাসী।
ধোনির সেই কান্নার মুহূর্তটি ভুলতে পারেননি লেগস্পিনার যুগবেন্দ্র চাহাল। গত বিশ্বকাপটি ছিল চাহালের প্রথম বিশ্বকাপ।
তাই তার অনুভূতিটা একটু বেশি আবেগপ্রবণ। জয়-পরাজয়সহ বিশ্বকাপে ঘটে যাওয়া প্রায় সব ঘটনাই মনে আছে তার।
তবে এসব ঘটনাকে ছাপিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচে ধোনির সেই কান্নার দৃশ্যটি তার স্মৃতিতে বেশ আটকে আছে।
স্মৃতি রোমন্থন করে শনিবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় এ লেগস্পিনার বলেন, ‘এটি ছিল আমার জীবনের প্রথম বিশ্বকাপ। মাহি ভাই (ধোনি) যখন আউট হয়ে ফিরলেন, আমি ব্যাট করতে নামি। ধোনির সেই কান্না দেখে নিজেকে সামলানো কঠিন ছিল আমার পক্ষে। সবাই স্ক্রিনে দেখলেও বিষয়টি সরাসরি আমার ওপর দিয়ে গিয়েছিল। খেলতে নামার আগেই মি. ফিনিশারের কান্না হৃদয়ে একটা ধাক্কা দিয়েছিল।’
সেদিন ধোনিকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো ভাষা ছিল না চাহালের কাছে। কারণ সবারই একই অবস্থা।
চাহাল বলেন, ‘শুরু থেকে ৯টা ম্যাচ আমরা দুর্দান্ত খেলেছিলাম। তার পরে হঠাৎ করে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়ার ঘটনাটা মন থেকে মানতে পারেননি আমাদের কেউ। বৃষ্টিকে থামানোর ক্ষমতা আমাদের হাতে ছিল না। তা নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে সেদিনই প্রথম আমরা দ্রুত হোটেলে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।’
বিশ্বকাপের সেই স্মৃতির কথা জানিয়ে এবার নিজের দিকে তাকালেন চাহাল।
বিশ্বকাপের পরে ভারতীয় দলের হয়ে মাত্র একটি ওয়ানডে ম্যাচে খেলেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলেও জায়গা হয়নি তার।
এ বিষয়ে যুগবেন্দ্র চাহালের বক্তব্য, কঠোর পরিশ্রম করে পারফরম করে ফের জাতীয় দলে ফিরবেন তিনি।
তবে তিনি আইপিএলের দিকেই বেশি মনোযোগী আপাতত। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার কাজ ধারাবাহিকভাবে পারফরম করা। আমি ও কুলদীপ যখন ভারতীয় দলে এলাম, তখন কিন্তু দুজনেই ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করেছি। আইপিএলের পরে আমাদের দলের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তিও অনেক বেড়ে গেছে।’
প্রসঙ্গত বিশ্বকাপে নকআউটপর্বে তথা সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। এদিন ইনিংসের শুরু থেকে ভারত যখন একের পর এক উইকেট হারাচ্ছিল, তখনও মাঠে দেখা যাচ্ছিল না মহেন্দ্র সিং ধোনিকে।
৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ২৪ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত। সেমিফাইনালের মতো ম্যাচে প্রথমে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত যখন বিপদে, তখনও ধোনি কেন ব্যাটিংয়ে নেই? এমন প্রশ্ন উঠেছিল কমেন্ট্রি বক্স থেকেও।
এর পর খেলায় শুভ সমাপ্তি টানতে রিজার্ভ ডেতে সম্পূর্ণ দায়িত্বও এসে পড়ে ধোনির কাঁধে। উইকেটের একপ্রান্ত সামলে নিচ্ছিলেন এই সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক।
যদিও ম্যাচ ফিনিশ করতে পারেননি মি. ফিনিশার। গাপটিলের অসাধারণ থ্রোতে রান আউট হয়ে টেল-এন্ডারদের হাতে ম্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
কিউই বোলিং তোপে ১৮ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেন ২০১১ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
রানআউটের আগে ৭২ বলে ৫০ রান করেন তিনি। তবে এই অর্ধশতক যে মোটেই সুখকর ছিল না ধোনির জন্য তা বেশ বোঝা যাচ্ছিল সাজঘরে যখন ফিরছিলেন তিনি।
কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন ধোনি। আর ধোনির সেই কান্না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে রীতিমতো ভাইরাল হয়।