হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল শুরু বুধবার
তাঁতপণ্যের ব্যবহার, প্রচার, প্রসার, বাজারজাতকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রস্তুতকারক, ডিজাইনার, ক্রেতাদের মধ্যে মেলবন্ধন স্থাপন ও ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্য বিলুপ্তিরোধে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হচ্ছে চার দিনব্যাপী তাঁতপণ্যের মেলা ‘হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল-২০১৯’।
আগামী ২৩ অক্টোবর (বুধবার) রাজধানীর গুলশানের খাজানা গার্ডেনিয়া গ্রান্ড হলে বিকেল পাঁচটায় এই ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বিশেষ অতিথি শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) খাজানা গার্ডেনিয়া গ্রান্ড হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম ও অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশের সভাপতি মানতাশা আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের উৎসবে মোট ৪৫টি স্টলে ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথা, বেনারসি শাড়ি, টাঙ্গাইলের শাড়ি, জামদানি শাড়ি, সিরাজগঞ্জের শাড়ি-লুঙ্গি-গামছা, মণিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্য কাপড়, খাদি, রাজশাহী সিল্ক, পাটজাত পণ্য, শতরঞ্জি পণ্য, বাঁশ-বেত পণ্য, পটচিত্র প্রদর্শন ও বিক্রি করা হবে।
ফেস্টিভ্যালে তাঁতিদের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় চিত্রশিল্পী ও ডিজাইনারদের তৈরি আর্কষণীয় দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য বুননের প্রক্রিয়াও প্রদর্শন করা হবে। এছাড়াও লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ম্যাচমেকিংয়ের ওপর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, দৈনন্দিন জীবন থেকে তাঁতশিল্পের ব্যবহার হারিয়ে গেলে আমাদের জীবনে সাংস্কৃতিক শূন্যতা দেখা দেবে। আমাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্রে যে সংস্কৃতির সঙ্গ আছে, তা তুলে ধরা হবে এই উৎসবের মাধ্যমে। যাতে এসব পণ্য বিলীন হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। ব্যবসা-বাণিজ্যকে সংস্কৃতিবান্ধব করা আমাদের উদ্দেশ্য।
অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশের সভাপতি মানতাশা আহমেদ বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যগুলোর প্রসারে যা যা করা দরকার সেগুলো করে যাচ্ছি। এরই আলোকে আজকের এই উৎসব। দেশের তাঁতশিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আমাদের এই আয়োজন।
তিনি আরও বলেন, চারদিনের এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা দেশের হস্তশিল্পকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দিতে পারবো। এখানে ক্রেতাদের সঙ্গে উদ্যোক্তা ও তাঁতিদের মেলবন্ধন তৈরি হবে। তাঁতপণ্যের ব্যবহার, প্রচার, প্রসার ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বিলুপ্তিরোধ করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ডিজাইনারদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- কুহু প্লামোন্দন, কণকচাপা চাকমা, বিপ্লব সাহা, শামীম আখতার, নুজহাত ইউসুফ বারী, চন্দ্র শেখর সাহা ও শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক কায়কোবাদ রানা প্রমুখ।
বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে তাঁতপণ্য ও তাঁতিদের সার্বিক কল্যাণের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে তাঁতপণ্য প্রদর্শনে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশ যৌথভাবে এই ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছে।
প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী।