১৮ বছর আগের ছবির জন্য ক্ষমা চাইলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী
আঠারো বছর আগে স্কুলের এক অনুষ্ঠানে মুখে কালো রং মাখা একটি ছবির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দেশটির আসন্ন নির্বাচনের আগে ছবিটিকে কেন্দ্র করে বর্ণবাদ বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ায় অকপটে ক্ষমা চান তিনি।
২০০১ সালে তোলা ওই ছবিটি চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
ছবিটি নিয়ে ‘গভীরভাবে অনুতপ্ত’ ট্রুডো বলেছেন, ওই মেকআপ নেয়ার আগে তার বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও ‘ভালো করে জানা উচিত ছিল’।
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর এ সন্তান দেশটির নামকরা স্কুলগুলোতেই পড়েছিলেন; এর মধ্যে ভ্যাঙ্কুবারের ওয়েস্ট পয়েন্ট গ্রে অ্যাকাডেমির ইয়ারবুক ফটোতে ট্রুডোর মুখে ও হাতে কালো মেকআপের এ ছবিটি পাওয়া যায়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লিবারেল পার্টির শীর্ষ নেতা ট্রুডো জানান, দেড় যুগ আগে স্কুলে ‘আরব্য রজনী থিমের’ এক অনুষ্ঠানে আলাদীন সাজতে গিয়েই তিনি ওই মেকআপ নিয়েছিলেন।
ছবিটি যে ‘বর্ণবাদী’ তা স্বীকার করে নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এরকমটা করা উচিত হয়নি বলে বুঝতে পেরেছেন তিনি।
আরেকবার হাই স্কুলের এক ট্যালেন্ট শো’তেও এ ধরনের মেকআপ নিয়েছিলেন, জানান ট্রুডো।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জানানোর পর টুইটারে তার হাই স্কুলের ওই ছবিটিও ছড়িয়ে পড়ে।
স্কুলজীবনে ট্রুডোর এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিমস।
সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফা ফারুক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে বাদামি/কালো মেকআপে দেখা সত্যিই দুঃখজনক। এ ধরনের মেকআপ নিন্দনীয়; এটি বর্ণবাদ ও প্রাচ্যপুরানের ইতিহাস ফিরিয়ে আনে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা অ্যান্ড্রু শিয়ের বলেছেন, ট্রুডোর ওই ছবি ২০০১ সালেও যেমন, এখনও তেমনই ‘বর্ণবাদী’। লিবারেল পার্টির নেতা কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘উপযুক্ত নন’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আগামী ২১ অক্টোবরের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে চাওয়া ট্রুডোর লিবারেল পার্টির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে বিভিন্ন জনমত জরিপে আভাস মিলেছে। এমন সময় ছবি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক তার জন্য বড় ধাক্কা হয়েই এলো বলে মনে করা হচ্ছে।