রংপুর বিভাগ

কুড়িগ্রামে সন্ধ্যা হতেই কুয়াশার সঙ্গে নামছে শীত, শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস

 কুড়িগ্রাম:  দিনে সূর্যালোকে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। সন্ধ্যা হলেই হালকা কুয়াশায় ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ। সারারাত গাছের পাতা নিঙড়ে টিনের চালে পড়া শিশির বিন্দুর টিপটপ শব্দ জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা । উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের আগমনের চিত্র এটি। দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই সহনীয় থাকলেও সন্ধ্যা হতেই তা হ্রাস পেয়ে বাসিন্দাদের উষ্ণ কাপড় পরিধানে বাধ্য করছে। স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার বলছে, ডিসেম্বরের শুরুতে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার (কৃষি ও সিনপটিক) সূত্র জানায়, জেলায় গত কয়েকদিন ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে।  শীতের স্বাভাবিক নিয়মে আগামীতে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। সঙ্গে বাড়বে কুয়াশার ঘনত্ব।
এদিকে, শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধনুকররা। আর পোশাক সংগ্রহে ভ্রাম্যমাণ কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ধরলা অববাহিকার দিনমজুর জোবেদ আলী জানান, গরমের দিন তাদের জন্য ভালো। শীত আসলেই নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। শীতবস্ত্রের অভাবে যেমন কষ্ট পেতে হয়, তেমনি এই মৌসুমে মাঠে কাজ করে রোজগার করা তাদের জন্য আরও বেশি কষ্টদায়ক।
জোবেদ আলী আরো বলেন, ‘এলাও তেমন ঠান্ডা পড়ে নাই। গরমের দিনে ভালো। ঠান্ডা আসলে কাপড়ের কষ্ট, কামাই (রোজগার) করি খাওয়াও কষ্টের।’
এদিকে, চরাঞ্চলে এখনও জেঁকে বসেনি শীত। রাতে হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলেও দিনের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক বলে জানান সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর রলাকাটার বাসিন্দা মুনির হোসেন। ব্রহ্মপুত্র নদের চরের বাসিন্দা ও পেশায় শিক্ষক মুনির বলেন, ‘তাপমাত্রা অনেকটা কমে আসলেও এখনও তীব্র শীত আসেনি। রাতে চারপাশ হালকা কুয়াশায় ঢেকে থাকলেও ঠান্ডা খুব একটা লাগছে না। চরের জীবযাত্রা এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।’
মৌসুমের শুরুতে শীতের তীব্রতা হালকা হলেও ডিসেম্বরে একাধিক শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিচ্ছে স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। তখন তাপমাত্রা অনেকটাই হ্রাস পেয়ে জনজীবনে বিরূপ প্রভাব পরার আশঙ্কা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের (কৃষি ও সিনপটিক) পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জেলায় একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ডিসেম্বরের শেষের দিকে মাঝারি থেকে ভারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, শীত মোকাবিলায় সরকারিভাবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার নয় উপজেলায় ও তিন পৌরসভায় ৩৫ হাজার ৭শ’ কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও শীতার্তদের পোশাক কেনার জন্য উপজেলা ভেদে ৮ থেকে ১৪ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button