খেলা

আত্মবিশ্বাসের অভাবে ‘দল’ আর ‘দল’ নেই

বিশ্বকাপ থেকে শ্রীলঙ্কা সফর, সেখান থেকে চট্টগ্রাম, ওখান থেকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। তিন সংস্করণের ক্রিকেটের কোথাও বাংলাদেশ ঠিক ‘দল’ হয়ে খেলতে পারছে না। বিশ্বকাপে তাও সাকিব-মুশফিকের মতো দুজন পারফর্ম করেছিলেন বলে অনেক কিছু চোখে তত কাঁটা দেয়নি। কিন্তু এরপর?

বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে তার দলের বাজে হারের পর স্বীকার করে নিলেন, দলের আত্মবিশ্বাস তলানিতে। আর তাই কী করণীয় সে বিষয়ে মস্তিষ্কও সাড়া দিচ্ছে না। আত্মবিশ্বাসের অভাবে তাই ‘দল’ আর ‘দল’ নেই এখন।

‘কনফিডেন্স লো এটা আমি মনে করি। একই সঙ্গে যেহেতু কনফিডেন্স ওই অবস্থায় নেই তাই মাইন্ডসেটও পরিষ্কার না।’ সাকিব আফগানদের কাছে মিরপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচে ২৫ রানে হারের পর একটি প্রশ্নে একমত হয়ে জানালেন, ‘তাই একটাকে আরেকটার পরিপূরক বলতে পারেন।’

বোলাররা ভালো করতে করতে হঠাৎ গুলিয়ে ফেলছেন খুব। ব্যাটসম্যানদের খেলা ক্রিকেটে দায়িত্ব নিতে পারছেন না বেশিরভাগ বাংলাদেশি খেলোয়াড়। এ এক বড় সমস্যা। এবং বাংলাদেশ দল যে হালে দলগত খেলা ভুলে যাওয়া এক দল তা স্বীকার করে নিয়ে সাকিবের বিশ্লেষণ, ‘প্রতি ম্যাচে হয়তো একজন দুজন পারফর্ম করছে বা করছে না। কিন্তু বেশিরভাগ খেলোয়াড় ফেল করছে।

স্বাভাবিক অবস্থায় যেটা হয় বেশিরভাগ খেলোয়াড় পারফর্ম করে, দু-একজন ফেল করে। ওটাতে খুব একটা সমস্যা হয় না। আর দিনশেষে এটা যেহেতু টিমগেম তাই টিম হিসেবে যতক্ষণ না খেলতে পারছি ততক্ষণ জেতা খুবই কষ্টকর।’ এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে নিজের খেলার পরিকল্পনা করাটা ভালো করে শিখতে হবে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় প্রসঙ্গে সাকিব বলছিলেন, ‘আসলে এটা প্রত্যেক ব্যক্তিকে দায়িত্ব নিতে হবে নিজের। তাদের গেমপ্ল্যান তৈরি করতে হবে।

কীভাবে তারা এটা ওভারকাম করতে পারে। কোচ যত বলুক, অন্যরা যত বলুক, দিনশেষে খেলাটা আপনারই খেলতে হয়। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং আপনাকে করতে হয়। তাই তিন জায়গায় কী অ্যাপ্রোচ হবে এবং কীভাবে সফল হবেন সেই পরিকল্পনা আপনার নিজেরই করতে হবে।’

আর গতকালের ম্যাচ নিয়ে তো সাকিবের সবদিক দিয়ে হতাশার শেষ নেই। বিশেষ করে টস হেরে প্রতিপক্ষকে বল হাতেও চেপে ধরার পর তাদের ১৬৪ করে ফেলা মানতে পারেন না অধিনায়ক। দায়ী করেন এক্সট্রা ১৮ রান ও একটি নো বলকে। যে নো বলটি তাইজুল ইসলামের। ১৫তম ওভারে প্রথম বলে। আসগার আফগান ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন। মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে ওই অবস্থায় জুটিটা ভেঙে মোমেন্টাম নিজেদের হাতে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।

‘আমার মনে হয় নো বলটা বেশি ভুগিয়েছে। আর এক্সট্রা রানও বেশি ভুগিয়েছে। ওখানে আমরা অনেক পেছনে পড়ে গেছি।’ তবে সাকিবের আসল হতাশা, ‘আমরা ওদের ম্যাচটা অনেকটা দিয়ে এসেছি বলে আমি মনে করি। একটা সময় ছিল যখন ম্যাচ আমরা দু হাতে লুফে নিতে পারতাম। যেখানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’

মুশফিকুর রহিমকে ওপেনিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ‘দলগত’ বললেন সাকিব। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের এই চোখে কাঁটা দেওয়ার মতো ব্যর্থতাকে কী বলবেন? এর ব্যাখ্যা কথার মাঝেই থাকে। দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হওয়া। দুই ম্যাচে এক হারের পরও অপর দলটি জিম্বাবুয়ে বলেই দু’দলের একটি হয়ে ফাইনালে খেলার আশা সাকিবের।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button